মেট্রোরেলে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো আবুল কালামের দাফন সম্পন্ন
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:১১, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১২:১৮, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পোড়াগাছা মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পৌর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে রবিবার গভীর রাতে আবুল কালামের মরদেহ নিজ গ্রামের বাড়ি মোক্তারচর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে পৌঁছায়। নিহত আবুল কালাম (৩৫) ছিলেন স্থানীয় মৃত জলিল চোকদারের ছেলে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত ছিলেন। পরিবারসহ বসবাস করতেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকার মনোয়ার ভিলায়।
পারিবারিক জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। পাঁচ বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ও তিন বছরের মেয়ে সুরাইয়াকে রেখে অকালে চলে গেলেন কালাম।
স্ত্রী আইরিন আক্তার পিয়া চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না। তিনি বলেন,“আমার সন্তানরা এখনো বুঝতে পারেনি, তাদের বাবা আর ফিরবে না। ওরা বলে—‘বাবা ঘুমাচ্ছে মা, তুমি কান্না করোনা।’ আমি কীভাবে ওদের বোঝাই, ওদের বাবা আর কখনো জাগবে না!”
তিনি আরও বলেন,“আবুল কালামই ছিল আমাদের একমাত্র ভরসা। এখন আমি ও সন্তানরা একেবারে দিশেহারা হয়ে গেছি।”
চাচাতো ভাই আব্দুল গণি চোকদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“সরকারের অবহেলার কারণেই আমার ভাই মারা গেল। এখন এই মৃত্যুর দায় নেবে কে?”
নড়িয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাকী দাস বলেন,“আবুল কালামের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানাজা ও দাফনে অংশ নিয়েছি। প্রশাসন তার পরিবারের পাশে রয়েছে এবং যেকোনো প্রয়োজনে সহযোগিতা করবে।”
এর আগে রোববার রাত ৯টার দিকে মরদেহ নেওয়া হয় সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন আইল পাড়ায়, যেখানে শ্বশুরবাড়ির অল্প দূরত্বে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। স্থানীয় বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদে রাত ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাজা।
নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই সোহান জানান, প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শরীয়তপুরের নড়িয়ায়, যেখানে সোমবার সকালে দাফন সম্পন্ন হয়।
