জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা, বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করলেন মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:০১, ৭ নভেম্বর ২০২৫
বিএনপি ও জামায়াতের ইসলামের লোগো
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান নিয়ে নতুন রাজনৈতিক গতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
শুক্রবার সকালে শেরেবাংলা নগরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন,“আমাদের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। আমরা
গতকাল স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর যা জানিয়েছি, সেটিই বিএনপির আনুষ্ঠানিক বক্তব্য।”
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। তারা সবাই জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জামায়াতের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়,“জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ আলোচনার পর জুলাই সনদে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর আইনানুগ বাস্তবায়ন ও সময়মতো নির্বাচন আয়োজনের জন্য আন্তরিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।”
বিএনপি জানায়, কোনো মতেই নিত্যনতুন প্রশ্ন উত্থাপন করে বা নতুন সংকট তৈরি করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। দলটি সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী ঐ সনদের সব বিষয় বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন,“আমরা কয়েক দিন আগে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলাম। উপদেষ্টা পরিষদ সেটি গ্রহণ করেছে। আমি বিএনপির মহাসচিবকে ফোন করে আলোচনার প্রস্তাব জানিয়েছি, তিনি আগ্রহের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং বলেছেন দায়িত্বশীলদের সঙ্গে পরামর্শ করে জানাবেন।”
তিনি আরও জানান, বিএনপি ইতিবাচক সাড়া দিলে সরাসরি আলোচনায় বসার আশা রাখছে জামায়াত। একই সঙ্গে ৯-দলীয় জোটের কিছু দলও তাদের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
ডা. তাহের বলেন, “আমরা চাই, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতি ঠিক করা হোক। পরিস্থিতি ঠিক হলে সব দলই নির্বাচনের পথে আসবে। এরপর সিট বণ্টন থেকে শুরু করে সমঝোতা নিয়ে আলোচনা হবে।”
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সরকারকে পরামর্শ দিতে সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল, যা প্রায় শেষের পথে। কিন্তু এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সংলাপ শুরু হয়নি। উপদেষ্টা পরিষদের সর্বশেষ বৈঠকে দলগুলোকে দ্রুত একমত হওয়ার আহ্বান জানানো হলেও বাস্তবে তেমন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
ডা. তাহের বলেন,“সময়ও এখন বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। দ্রুত আলোচনা শুরু হওয়া দরকার, নাহলে নির্বাচন সামনে এসে পড়লে নতুন জটিলতা তৈরি হবে।”
