শেখ হাসিনার মামলার রায় ১৭ নভেম্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫১, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা / ফাইল ছবি
গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে দায়ের মামলায় রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল এই মামলার রায় ১৭ নভেম্বর ঘোষণার জন্য নির্ধারণ করেন।
প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম মামলায় শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তির আর্জি জানিয়েছেন।
২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় জমা পড়ে। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১২ মে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। ১ জুন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। ১০ জুলাই তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
বিগত ৪ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী খোকন চন্দ্র বর্মণের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ মোট ৮১ জনকে সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে, যাদের মধ্যে ৫৪ জন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন। অভিযোগপত্র ছিল ১৩৫ পৃষ্ঠার এবং ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার নথি ও তথ্যপ্রমাণ সংযুক্ত ছিল। মামলার চলাকালে আবদুল্লাহ আল-মামুন কারাগারে থাকলেও বাকিরা পলাতক।
বিচারাধীন পাঁচটি অভিযোগ:
১. গণভবনের উসকানিমূলক বক্তব্য: ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এর প্ররোচনায় আসাদুজ্জামান খান ও আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ তৎকালীন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালান।
২. হেলিকপ্টার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ: আন্দোলন দমন করতে হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয়ার অভিযোগ। তিন আসামি এই নির্দেশ বাস্তবায়নে তাদের অধীনস্থ বাহিনীকে নির্দেশনা দেন।
৩. রংপুরে ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা: ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গুলি করে ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা। আসামিদের নির্দেশ, প্ররোচনা ও সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়েছে।
৪. ঢাকার চানখাঁরপুলে হত্যা: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখাঁরপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ছয়জন নিহত হন।
৫. আশুলিয়ায় হত্যা ও লাশ পোড়ানো: একই দিনে আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যা, পাঁচজনের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া এবং গুরুতর আহত একজনকে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, এসব ঘটনায় আসামিদের প্ররোচনা, নির্দেশ, সহায়তা ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
