‘রানা প্লাজা আওয়ামী লীগের তৈরি ট্র্যাজেডি’—প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:৩৬, ১২ নভেম্বর ২০২৫
প্রেস সচিব শফিকুল আলম
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে রানা প্লাজা ধসের ঘটনাকে ‘আওয়ামী লীগের তৈরি ট্র্যাজেডি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বুধবার (১২ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে ভয়াবহতম শিল্প দুর্ঘটনাগুলোর একটি ছিল রানা প্লাজা ধস, যেখানে অন্তত ১,১৩০ জন নিহত হন—যাদের বেশিরভাগই ছিলেন নারী পোশাক শ্রমিক।
তিনি অভিযোগ করেন, ভবনটির মালিক সোহেল রানা আওয়ামী লীগের প্রভাব ব্যবহার করে নিয়ম ভেঙে ভবন নির্মাণ করেন এবং ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা জানানো সত্ত্বেও শ্রমিকদের জোর করে কাজে ফেরত পাঠান। প্রেস সচিবের ভাষায়, “দলের আশ্রয়ে সাহসী হয়ে ওঠা সোহেল রানা কর্মীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন।”
শফিকুল আলম দাবি করেন, তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাভারের সংসদ সদস্য মুরাদ জং-এর সঙ্গে সোহেল রানার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু দেশের ভেতরে আওয়ামী লীগের প্রচারযন্ত্র রানার রাজনৈতিক পরিচয় আড়াল করতে সচেষ্ট ছিল। স্থানীয় পত্রিকাগুলোকেও কেবল উদ্ধার অভিযান ও মৃতের সংখ্যা নিয়ে লেখার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন।
প্রেস সচিব বলেন, “রানা একা কোনো ব্যতিক্রম ছিলেন না; তিনি ছিলেন তখনকার চলমান ব্যবস্থারই এক স্বাভাবিক ফল।”
তিনি আরও যোগ করেন, শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসন একনায়কতন্ত্রকে পাকাপোক্ত করেছে এবং ‘স্থানীয় দানবদের’ জন্ম দিয়েছে। তাঁর মতে, সোহেল রানা, নিজাম হাজারী, শামীম ওসমান—সবাই একই প্রভাব ও দায়মুক্তির সংস্কৃতির অংশ। এমনকি শিক্ষিত সমাজেও এই সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ে, যার প্রতিফলন দেখা যায় বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যায়।
শফিকুল আলম মন্তব্য করেন, “এই সব ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়—বরং ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব ও দায়মুক্তির সংস্কৃতির অনিবার্য পরিণতি।”
রাজনৈতিক ক্ষমতার ছায়ায় তৈরি এই ‘দানবদের’ কারণে সমাজে ভয় ও অন্যায়ের সংস্কৃতি জেঁকে বসেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
