‘ডিজিটাল ডিটক্স’ বিপ্লব
এক মাস ফোন ছেড়ে দিন!
জীবনযাপন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩:৫১, ৯ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০১:০৯, ১০ অক্টোবর ২০২৫

বর্তমান ডিজিটাল যুগে স্মার্টফোন যেন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকাল থেকে রাত—ঘুমানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ফোনই আমাদের সঙ্গী। কিন্তু যদি আপনি এক মাসের জন্য ফোন পুরোপুরি ব্যবহার বন্ধ করে দেন, তাহলে কী হবে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমন এক মাসের “ডিজিটাল ডিটক্স” আপনার শরীর ও মনের ওপর ফেলতে পারে আশ্চর্যজনক ইতিবাচক প্রভাব।
নিরবচ্ছিন্ন নোটিফিকেশন, সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট, খবরের বন্যা—সবই আমাদের মস্তিষ্কে বাড়ায় চাপ। এক মাস ফোন থেকে দূরে থাকলে মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায়। মন শান্ত হয়, উদ্বেগ ও মানসিক ক্লান্তি কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ফোন থেকে বিরতি নেওয়া মানসিক প্রশান্তি ফিরিয়ে আনে এবং মনোযোগ বাড়ায়।
রাতে ফোনের স্ক্রিনের নীল আলো শরীরের প্রাকৃতিক ঘুমচক্র নষ্ট করে। ফলে ঘুম আসতে দেরি হয়, ঘুমের গভীরতাও কমে। এক মাস ফোন ছাড়া থাকলে শরীরের ‘বডি ক্লক’ পুনরায় ঠিক হয়, ঘুম হয় গভীর ও সতেজ, সকালে ওঠা হয় সহজ।
অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের কারণে চোখে দেখা দেয় জ্বালা, শুষ্কতা, এমনকি মাথাব্যথাও। ‘স্মার্টফোন ভিশন সিনড্রোম’-এর ঝুঁকি কমাতে ফোন থেকে বিরতি অত্যন্ত কার্যকর। মাত্র এক মাস দূরে থাকলেই চোখের ক্লান্তি কমে এবং দৃষ্টিশক্তি থাকে সুরক্ষিত।
ফোন ছাড়লে স্বাভাবিকভাবেই আপনি বেশি সময় বাইরে কাটান, হাঁটেন, ব্যায়াম করেন বা প্রকৃতির সঙ্গে সময় দেন। এতে শরীরচর্চা বেড়ে যায়, বিপাকক্রিয়া উন্নত হয়, এবং অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
অনলাইন যোগাযোগের জায়গা নেয় মুখোমুখি আলাপচারিতা। পরিবার বা বন্ধুর সঙ্গে সময় কাটানো, একসঙ্গে খাওয়া বা কথা বলার অভ্যাস ফেরে। এতে মানসিক তৃপ্তি ও সম্পর্কের গভীরতা দুটোই বাড়ে।
স্মার্টফোন আমাদের মনোযোগ নষ্টের বড় কারণ। এক মাস ফোন ছাড়া থাকলে লক্ষ্য করবেন—কাজে মনোযোগ বাড়ছে, সময়ের ব্যবহার হচ্ছে দক্ষভাবে, আর মন শান্ত থাকায় উৎপাদনশীলতা বেড়ে যাচ্ছে।
“ফোনবিহীন এক মাস” আসলে এক ধরনের মানসিক ও শারীরিক পুনর্জাগরণ। এটি শুধু চোখ ও ঘুমের জন্য নয়, সম্পর্ক, কর্মদক্ষতা, এমনকি আত্মশান্তির জন্যও বিস্ময়কর এক অভ্যাস হতে পারে।