কফের রঙে শরীরের স্বাস্থ্যের গোপন সংকেত
জীবনযাপন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:৫৯, ৮ অক্টোবর ২০২৫

ঠান্ডা লাগলে সর্দি বা কফ হওয়া সাধারণ ঘটনা। কিন্তু নাক দিয়ে বেরনো শ্লেষ্মা শুধু বিরক্তিকর নয়, এটি শরীরের ভেতরের অসুখ-বিসুখেরও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়। চিকিৎসকদের মতে, কফের রঙের পরিবর্তন অনেক সময় সংক্রমণের ধরন বা শারীরিক অবস্থার ইঙ্গিত দেয়।
স্বচ্ছ কফ
সাধারণত সাদা বা স্বচ্ছ সর্দি হলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি হালকা অ্যালার্জি বা ঠান্ডাজনিত হালকা সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে। শরীর তখনও সুস্থভাবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছে।
হলুদ বা সবুজ কফ
কফের রং যদি হলুদ বা সবুজ হয়, তবে বুঝতে হবে শরীর সংক্রমণের সঙ্গে লড়ছে। সাধারণত সাইনাস ইনফেকশন বা ঠান্ডা-কাশির ভাইরাসজনিত কারণে এমন হয়। তবে যদি এ অবস্থা ১০ দিনের বেশি থাকে, তবে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ে — সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লাল বা গোলাপি কফ
নাকে বা শ্বাসনালীতে রক্তক্ষরণের ফলে কফে লাল বা গোলাপি আভা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ঘষাঘষি, শুষ্ক বাতাস কিংবা ফুসফুসে তরল জমে যাওয়ার কারণেও এমন হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে বলা হয় Pulmonary Edema বা এডিমা, যা দ্রুত চিকিৎসার দাবি রাখে।
বাদামি কফ
ধুলো, ধোঁয়া বা পুরনো রক্তের প্রভাবে কফের রঙ বাদামি হতে পারে। এটি বিশেষ করে ধূমপায়ীদের জন্য সতর্কবার্তা। দীর্ঘদিনের ধূমপান ফুসফুসে ক্ষতি করে এবং ব্রঙ্কাইটিস বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD)-এর ঝুঁকি বাড়ায়।
কালো কফ
সবচেয়ে বিপজ্জনক রঙ — কালো কফ! এটি ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ধোঁয়া বা মারাত্মক দূষণের কারণে হতে পারে। যদি কালো কফের সঙ্গে জ্বর, মাথাব্যথা বা শ্বাসকষ্ট থাকে, অবহেলা করবেন না। অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
চিকিৎসকরা বলেন, কফের রঙ যদি দীর্ঘদিন অস্বাভাবিক থাকে এবং এর সঙ্গে জ্বর, মাথাব্যথা, মুখ ফোলা, বা নাক দিয়ে রক্তপাত হয় — তবে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
কফ শরীরের “ইনডিকেটর” — তার রঙের ভেতরেই লুকিয়ে থাকে আপনার ফুসফুস, গলা ও শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের গোপন রহস্য।