গরুকে বিয়ে করেছেন এক নারী
অন্যরকম ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:২৫, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
একটি বাছুর গরুকে বিয়ে করেছেন এক নারী। এক বছর আগে ওই মহিলার স্বামী মারা গেছেন। তিনি ভাবছেন তার স্বামী গরু হয়ে পুনর্জন্ম নিয়েছে এবং তার কাছে ফিরে এসেছে। গরু স্বামীর সঙ্গে তিনি এখন সুখে দিন কাটাচ্ছেন।
দা সান জানায়, খিম হ্যাং নামে ওই নারী কম্বোডিয়ার ক্রাটি প্রদেশে বাস করেন। তার বয়স এখন ৭৬ বছর।
খিম বলেন, গরুটি একদিন সিঁড়ি বেয়ে আমার কাছে এলো। আমার ঘাড় ও চুলের কাছে এসে চেটে দিলো, যাকে তিনি চুমু বলে দাবি করছেন। তারপর আমাকে আদর করে সিঁড়ি দিয়ে আমার পেছনে নামলো। ঠিক যেমন আমার স্বামী করতেন। তার পর থেকেই আমার মনে হচ্ছে, আমার মৃত স্বামীই গরু হয়ে আমার কাছে ফিরে এসেছে, বলেন তিনি।
আদর করার পর থেকেই খিমের মনে হচ্ছে, এই গরুই তার মৃত স্বামী। তার স্বামীরই পুনর্জন্ম হয়েছে গরুরূপে। তা মনে হওয়ায় আর দেরি করেননি তিনি। অনুষ্ঠান করে বিয়েও করে নিয়েছেন। বিয়ের সেই অনুষ্ঠানে গ্রামবাসীরাও উপস্থিত ছিলেন।
গরুটিকে বিয়ে করে নিজের একতলা ঘরেই রেখেছেন খিম। নিয়মিত গোসল করানো, খেতে দেওয়ার পাশাপাশি স্বামী হিসেবেই তিনি যত্ন নিচ্ছেন গরুটির। এমনকি আরাম করে ঘুমের জন্য নরম বালিশ-বিছানার ব্যবস্থাও করেছেন গোরূপী ‘স্বামী’র জন্য। গরুটি এখন একই বিছানায় খিমের সঙ্গে ঘুমায়।
বিয়ের ঘটনা নিয়ে রয়টার্সকে খিম জানিয়েছেন, আমি মনে করি গরুটি আমার স্বামী। কারণ ওই গরু আমার সঙ্গে একই আচরণ করে, যা স্বামী বেঁচে থাকার সময় আমার সঙ্গে করতেন। প্রথম কবে তার এই অনুভূতি হয়েছিল, সে কথাও জানিয়েছেন খিম। তিনি বলেছেন, আমি এখন গরুটির প্রেমে পড়ে গিয়েছি।
খিমের প্রতিবেশীরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বাছুরটির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর অপ্রত্যাশিতভাবে খুব অল্পসময়ের মধ্যেই বিয়ে করেন তিনি ।
খিমের ছেলে বলেছেন, আমি প্রাণিটির মধ্যে আমার বাবার আত্মা অনুভব করতে পারি। তাই আমরা কখনো গরুটিকে বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে যেতে দিই না।
এদিকে, দ্য মিরর জানায়, খিমা তার সন্তানদের বলেছেন, তিনি মারা যাওয়ার পর যেন তারা গরুটি বিক্রি না করে। একে নির্যাতন করতেও নিষেধ করেছেন। বরং তাদের গরু বাবাকে যত্ন নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন যতক্ষণ না প্রাণিটি মারা যায়।
এমনকি মৃত্যুর পরও, তিনি চান যে তারা গরুটিকে একজন মানুষের মতো সম্মান ও আচরণ করুক এবং ঐতিহ্যবাহী অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পালন করুক।
খিম হ্যাং পৃথিবীতে প্রথম নারী নন, যিনি গরুকে বিয়ে করেছেন। এর আগেও ইন্দোনেশিয়ার উপকূলীয় গ্রামের এক কিশোরীকে ২০১০ সালে জোর করে গরুর সাথে বিয়ে দেওয়া হয়েছিলো।
১৮ বছর বয়সী নগুরাহ আলিতকে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গরুটির সাথে বিয়ে দিয়েছিলো গ্রামবাসী। তারপর ওই গ্রামের বাসিন্দারা গরুটির সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছিলো।
২০২১ সালে ক্রোয়েশিয়ার এক তালাকপ্রাপ্তা মহিলা তার পোষা কুকুর শেবাকে বিয়ে করেছিলেন, সে বিয়েতে ২০০ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
লন্ডনের ব্রিক্সটনে বসবাসকারী আমান্ডা রজার্স নামে ওই মহিলা এক পায়ে দাঁড়িয়ে কুকুরটিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

তিনি দ্য সানকে জানিয়েছিলেন, বহুবছর ধরে আমার জীবনে কুকুরটি ছিলো। আমি যখন হতাশা বোধ করতাম, তখন ও আমাকে হাসাতো এবং সান্ত্বনা দিত।
জীবনসঙ্গীর কাছ থেকে আমার আর কিছু চাওয়ার কথা আমি ভাবতেই পারছিলাম না।
তিনি বলেন, আমি যখন এক হাঁটু গেড়ে বসে কুকুরটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিলাম। তখন ও লেজ নাড়লো। তার লেজ নাড়া দেখেই আমি বুঝতে পারলাম যে সে 'হ্যাঁ' বলেছে।
আমান্ডা বলেছিলেন, কুকুরের সাথে তার এই বিয়েটি আইন সঙ্গত ছিলো না। তবে সেবা আমার জীবনে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ছিলো তা বোঝাতেই আমি কুকুরটিকে বিয়ে করেছিলাম।
কম্বোডিয়ার ৯৫ ভাগ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং পুনর্জন্মে বিশ্বাসী। তাদের ধারণা, একজন মানুষ মৃত্যুর পরও জীবিত থাকে এবং অন্য কোনো প্রাণি হয়ে জন্ম নেয়।
