কিশোরের ঔরসে মা, ক্ষমতাচ্যুত নারী মন্ত্রী
অন্যরকম ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:৪৪, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

আইসল্যান্ডের শিক্ষা ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী আস্থেলদার লোয়া থোরোসদোত্তির ৩৬ বছর আগে ১৫ বছরের এক কিশোরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন। এতে তিনি গর্ভবতী হন এবং জন্ম দেন এক ছেলে সন্তান। তিন যুগ পর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় তিনি তার অপরাধ স্বীকার করে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। কারণ ওই দেশে ১৮ বছরের নিচে কারও সাথে শারীরিক সম্পর্কস্থাপন করা অপরাধ।
ডেইলি মেইল জানায়, আস্থেলদারের বয়স এখন ৫৮ বছর। যখন তিনি ১৯৮৯ সালে ওই কিশোরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তখন তার বয়স ছিলো ২২ ও কিশোরের ১৬ বছর। পরের বছর অর্থাৎ যখন তার নিজের বয়স ২৩ এবং ওই কিশোরের বয়স ১৭ তখন একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন, যার বয়স বর্তমানে ৩৬ বছর।
ডেইলি মেইলের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ধর্মীয় একটি গ্রুপের কাউন্সেলর ছিলেন আস্থেলদার। সেখানেই ওই কিশোরের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেও পার্লামেন্ট থেকে তার পদত্যাগের কোনও পরিকল্পনা নেই, তিনি এমনটাই জানিয়েছেন।
তিনি এখন দেশটির মধ্য-বামপন্থী পিপলস পার্টির এমপি।
আস্থেলদারের ওই কিশোর প্রেমিকের নাম এরিক আসমুন্ডসন। বর্তমানে তার বয়স ৫২ বছর। ওই সময় বাড়িতে জটিল পরিস্থিতির কারণে আশ্রয় নিয়েছিলেন 'ধর্ম ও জীবন' নামের একটি গ্রুপে। সেখানে কাজ করতেন আস্থেলদার।
এই সুযোগে তাদের সাক্ষাৎ হয়। তারপর প্রেম। আইসল্যান্ডে নারী পুরুষের বিশেষ সম্পর্কে সম্মতি জানানোর বয়স ১৫ বছর। কিন্তু কেউ যদি মেন্টর হন, শিক্ষক বা শিক্ষিকা হন, যদি কোনও ব্যক্তি তার ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল হয় অথবা তার জন্য কাজ করে, তাহলে তার সঙ্গে ১৮ বছর বয়সের আগে ঘনিষ্ঠ হওয়া বেআইনি। যদি এই অভিযোগে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তাকে সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল দেওয়ার বিধান আছে। কিন্তু আস্থেলদার মনে করেন এরই মধ্যে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। এসব ইস্যুকে তিনি এখন অন্যভাবে দেখেন।
তবে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্ট্রান ফ্রেস্টাদোত্তির বলেছেন, বিষয়টি সিরিয়াস। সাধারণ পর্যায়ে মানুষ এসব বিষয়ে যা জানেন, তার চেয়ে কিছুটা বেশি জানার কথা আস্থেলদারের। তিনি সম্প্রতি এ অভিযোগ পেয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তার অফিসে তলব করেন আস্থেলদারকে। সেখানেই শিশুকল্যাণ বিষয়ক ওই মন্ত্রী পদত্যাগ করেন।
এদিকে, আইসল্যান্ড মনিটরকে আস্থেলদার জানিয়েছেন, আমি গর্ভবতী এই সংবাদ জানার পর আসমুন্ডসন হারিয়ে যায়। তাকে কোথাও খুঁজে পাইনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ১৯৯০ সালের জুনে তার দেখা পাই। তার কয়েকদিন পর আমার ছেলের জন্ম হয়, যদিও সন্তান জন্মগ্রহণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন আসমুন্ডসন। এরপর প্রথম এক বছর সে আমার সঙ্গেই ছিলো। কিন্তু তারপর সে আরেকটা মেয়ের সঙ্গে পালিয়ে যায়। এরপর সে আর কোনো যোগাযোগ করেনি। আমার ছেলের বয়স যখন আড়াই বছর, তখন সে আবার ফিরে আসে এবং প্রতি সপ্তাহে ছেলের সাথে দেখা করতে চায়।
আমি তাকে মাঝে মধ্যে আমার বাবার বাড়িতে ডেকে এনে বাচ্চাকে কোলে দিতাম। এরপর হঠাৎ আইন মন্ত্রণালয়ের সমন পাই। এবং তাকে বাচ্চার সাথে মাসে একবার দেখা করার অনুমতি দেয় সরকার। সে কয়েকবার দেখা করলেও আর কখনো আসেনি।
এদিকে, এতো বছর পর আসমুন্ডসন আইসল্যান্ডের আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে ডকুমেন্ট জমা দিয়েছেন। তাতে তিনি ওই সন্তানের ‘এক্সেস’ দাবি করেছেন। কিন্তু সন্তানের ‘এক্সেস’ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন আস্থেলদার। আসমুন্ডসনের এক নারী আত্মীয় এ বিষয়ে দু’বার কথা বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।
আইসল্যান্ড মনিটরকে আস্থেলদার আরও জানান, বাচ্চার কোনো দায়িত্ব নেয়নি আসমুন্ডসন। এমন কী ক্রিসমাসেও একটা গিফট দেয়নি। বাচ্চার বয়স যখন দেড় বছর, তখন তার সঙ্গে তাঁর বর্তমান স্বামীর সঙ্গে দেখা হয়। সৎ বাবা হয়েও তিনি আমার বাচ্চাকে নিজের সন্তানের মতো বড় করেছেন।