শেষ প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৩৫%, সব খাতেই মন্দা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১:০৩, ৯ অক্টোবর ২০২৫

গত অর্থবছরের (২০২৪–২৫) শেষ প্রান্তিকে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ, গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আগের বছরের তুলনায় অর্থনীতি বেড়েছে এই অল্প হারে—যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। কৃষি, শিল্প ও সেবা—সব খাতেই দেখা দিয়েছে মন্থরতা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এই প্রান্তিকভিত্তিক হিসাব প্রকাশ করে।
বিবিএসের হিসাবে দেখা গেছে, ওই সময় দেশে মোট মূল্য সংযোজন (ভ্যালু অ্যাডিশন) হয়েছে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা, যা আগের প্রান্তিকের (জানুয়ারি–মার্চ) তুলনায়ও কম।
গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক (জুলাই–সেপ্টেম্বর ২০২৪) ছিল সবচেয়ে দুর্বল, যেখানে প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় মাত্র ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
দ্বিতীয় (অক্টোবর–ডিসেম্বর) ও তৃতীয় (জানুয়ারি–মার্চ) প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয় যথাক্রমে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ ও ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
বিবিএসের কর্মকর্তারা জানান, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ঘটে যাওয়া অভ্যুত্থানকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক পরিবর্তন স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করে। নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর অর্থনীতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগে। ফলে পুরো অর্থবছরেই প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
বিবিএসের এই প্রান্তিকভিত্তিক হিসাব অনুযায়ি, এপ্রিল–জুন প্রান্তিকে তিনটি মূল খাতেই প্রবৃদ্ধি কমে আসে। এর মধ্যে সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ, শিল্প খাতে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ ও কৃষি খাতে ৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সেবা খাতের মন্থরতা অর্থনীতির সামগ্রিক গতি কমিয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে (২০২৫–২৬) বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। যদি চলমান অর্থনৈতিক সংস্কারগুলো সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে পরবর্তী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
অন্যদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ সময়ের জন্য সাড়ে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।