আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে আইসিইউ’র আবির্ভাব
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২২:৫৮, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

১৯৫২ সালের কথা। ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে আক্রান্ত হচ্ছিল শত শত মানুষ। পোলিওর এক বিশেষ ধরন 'বালবার পোলিও' রূপ নিয়েছিল মহামারীতে। ৯০ শতাংশের কাছাকাছি মৃত্যুহার।
শুরুর কথা:
আয়রন লাং নামক একধরনের নেগেটিভ প্রেশার ভেন্টিলেটর যন্ত্র ব্যবহার করা হতো তখন কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য। রোগীকে ঢুকিয়ে দেয়া হতো এই যন্ত্রের ভিতর এবং এর মাধ্যমে রোগীকে বাধ্য করা হতো শ্বাস নিতে। যন্ত্রের ভিতর তৈরি হতো ঋণাত্মক চাপ।
আইসিইউ এলো যেভাবে:
সেই সময় সদ্য বস্টন থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে ফিরেছেন স্যার ইয়েন ইবসেন। আইসিইউ তৈরির নেপথ্যে তিনিই ছিলেন প্রধান ভূমিকায়। তখন তিনি ব্যাগিং পদ্ধতির আইডিয়া দেন। এই পদ্ধতিতে একধরনের রাবারের ব্যাগ ব্যবহার করা হতো। বস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে এই পদ্ধতি শিখেছিলেন তিনি।
অনেক তর্ক বিতর্কের পর আরেকজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আলেকজান্ডার ল্যাসেন রাজি হলেন পদ্ধতিটি পরীক্ষা করে দেখতে। পরের দিন হাসপাতালে ভর্তি হয় ১২ বছর বয়সী রোগী ভিভি এবার্ট। তার উপরেই চালানো হলো পরীক্ষা। ইবসেন ক্রমাগত ব্যাগে চাপ দিতে থাকলেন। এক পর্যায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলেন এবার্ট। এরপর ঐ হাসপাতালে আরো অনেক রোগীদের উপর চালানো হয়েছিল সফল পরীক্ষা।
শুরুর সমস্যা এবং সমাধান:
আধুনিক ভেন্টিলেটর সিস্টেম তৈরির প্রথম ধাপ ছিল এই পদ্ধতি। কিন্তু তখন দেখা দিলো নতুন সমস্যা। এতো রোগীর এতোগুলো ব্যাগ চাপার জন্য প্রয়োজন পড়লো অনেক বেশি কর্মীর। সেই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এলো মেডিকেল ও ডেন্টালের প্রায় ১৫০০ জন শিক্ষার্থী।
ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট তৈরী:
অন্য রোগীদের সঙ্গে পোলিও মহামারীর রোগীদের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছিলনা। তখন পোলিও রোগীদের জন্য আলাদা ঘর তৈরি করা হলো। এই ঘরই ছিল তখনকার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিইউ। সেখানেই চিকিৎসা করা হতো পোলিও মহামারী রোগীদের। সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমে কমে মৃত্যুহার। এভাবেই আসে আইসিইউ এর ধারণা।