শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

| ১ কার্তিক ১৪৩২

ট্রাম্পের সঙ্গে বুধবার মোদির কোনো ফোনালাপই হয়নি: ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক 

প্রকাশ: ২২:৪০, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

ট্রাম্পের সঙ্গে বুধবার মোদির কোনো ফোনালাপই হয়নি: ভারত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক দাবিকে সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। ট্রাম্প বুধবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত আর রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে—সেদিন দুই নেতার মধ্যে কোনো ফোনালাপই হয়নি।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্টভাবে বলেন,“জ্বালানি ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে একটি বিবৃতি দিয়েছি। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কোনো কথোপকথন হয়নি।

তিনি আরও জানান, সর্বশেষ মোদি-ট্রাম্প ফোনালাপ হয়েছিল ৯ অক্টোবর, যেখানে গাজা শান্তিচুক্তির সাফল্যের জন্য মোদি ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান। ওই আলোচনায় দুজন বাণিজ্যচুক্তি ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়েও মতবিনিময় করেন এবং যোগাযোগ অব্যাহত রাখার বিষয়ে একমত হন।

এর আগে বুধবার (১৫ অক্টোবর) হোয়াইট হাউসের এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন,“ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনছে, এতে আমি খুশি ছিলাম না। মোদি আজ আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, তারা রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে।”

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, এটি একটি বড় পদক্ষেপ। এখন আমরা চীনকেও একই কাজ করতে বাধ্য করব।

ট্রাম্পের বক্তব্যের পরদিনই নয়াদিল্লি কূটনৈতিকভাবে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—এমন কোনো ফোনালাপ হয়নি। মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন,“ভারত তেল ও গ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমদানিকারক দেশ। অস্থির জ্বালানি বাজারে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করাই আমাদের অগ্রাধিকার। স্থিতিশীল জ্বালানির দাম ও সরবরাহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের নীতির মূল লক্ষ্য।”

তিনি আরও যোগ করেন, ভারতের জ্বালানি আমদানি সম্পূর্ণভাবে জাতীয় স্বার্থ এবং বাজারের বাস্তবতার ওপর নির্ভরশীল। রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন উৎস থেকে আমদানি বৈচিত্র্যই ভারতের জ্বালানি নীতির মূল অংশ।

ট্রাম্পের এই বক্তব্য মার্কিন নির্বাচনী প্রেক্ষাপটে এসেছে, যেখানে তিনি চীনের পাশাপাশি রাশিয়া-বিষয়ক কঠোর অবস্থান তুলে ধরতে চান। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতকে ঘিরে ট্রাম্পের মন্তব্য মূলত মার্কিন ভোটারদের উদ্দেশে রাজনৈতিক বার্তা হলেও নয়াদিল্লি চাইছে এমন বিভ্রান্তি না ছড়াতে।

ভারতের এই অস্বীকৃতি শুধু ট্রাম্পের দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে না, বরং ভবিষ্যতের মার্কিন-ভারত সম্পর্কেও কূটনৈতিক সতর্কতার ইঙ্গিত বহন করছে।

আরও পড়ুন