ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালাতে সিআইএকে অনুমতি ট্রাম্পের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:২৯, ১৬ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২০:০৯, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে (সিআইএ) তিনি ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছেন।
বুধবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি অনুমোদন দিয়েছি দুটি কারণে—ভেনেজুয়েলা তাদের কারাগারের বন্দিদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হচ্ছে।”
ট্রাম্পের এই মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, যিনি এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “না যুদ্ধ, না শান্তি—সিআইএ পরিচালিত কোনো অভ্যুত্থান আমরা বরদাশত করব না।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের নির্দেশে ইতোমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১০ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন ও ফাইটার জেট। হোয়াইট হাউসের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব ব্যবস্থা মাদক পাচার দমনের জন্য।
গত কয়েক সপ্তাহে ক্যারিবীয় সাগরে মাদকবাহী সন্দেহে পাঁচটি নৌকা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যাতে ২৭ জন নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাকে “বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড” বলে আখ্যা দিয়েছেন।
মাদুরোর প্রতিক্রিয়া: ‘রেজিম চেঞ্জ নয়, শান্তি চাই’
জাতির উদ্দেশে ভাষণে মাদুরো বলেন, “আমরা আরেকটি আফগানিস্তান, ইরাক বা লিবিয়া চাই না। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের প্রতি আহ্বান—যুদ্ধ নয়, শান্তি।”
তিনি আরও জানান, পেটারে ও মিরান্দা রাজ্যে সেনা, পুলিশ ও বেসামরিক মিলিশিয়া মহড়া শুরু হয়েছে দেশের নিরাপত্তা রক্ষায়।
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল ট্রাম্পের মন্তব্যকে “উত্তেজনাপূর্ণ ও আগ্রাসী” বলে অভিহিত করে বলেন, “সিআইএ ও মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি স্পষ্টতই আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি।”
ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে মাদুরো নিজে ও তার সামরিক কর্মকর্তারা ‘কার্টেল অব দ্য সানস’ নামে একটি মাদক চক্রের সঙ্গে যুক্ত। যদিও মাদুরো এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন।
সিআই ‘র সাবেক কর্মকর্তা মিক মুলরয় বিবিসিকে বলেন, “এ ধরনের অভিযান চালাতে হলে অবশ্যই প্রেসিডেন্টের বিশেষ অনুমোদন লাগে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের মাদকবিরোধী অভিযানে বড় ধরনের সম্প্রসারণের ইঙ্গিত।”
জাতিসংঘ ও আঞ্চলিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, সিআইএর সরাসরি ভূমিকা এবং সামরিক উপস্থিতি লাতিন আমেরিকায় নতুন সংঘাত উসকে দিতে পারে। অনেকের মতে, এটি এক নতুন ‘ঠাণ্ডা যুদ্ধের’ সূচনা হতে পারে, যেখানে ভেনেজুয়েলা আবারও যুক্তরাষ্ট্রের ‘গুপ্তযুদ্ধের’ কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে।