ট্রাম্প–মাদুরো ফোনালাপেও কমেনি যুদ্ধ-উত্তেজনা

যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার টানাপোড়েনের মধ্যেই গত সপ্তাহে গোপন ফোনালাপে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই নেতার আলোচনার সুনির্দিষ্ট বিষয়বস্তু প্রকাশ না হলেও সম্ভাব্য একটি সামনাসামনি বৈঠক নিয়ে প্রাথমিক স্তরে কথা হয়েছে বলে ধারণা পাওয়া যায়।

তবে ফোনালাপের পরও দুই দেশের উত্তেজনা বিন্দুমাত্র কমেনি; বরং ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

সূত্রমতে, আলোচনায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও যুক্ত ছিলেন। ফোনকলটি এমন এক সময় হয়, যখন যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

তবে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস–এর একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে—এখনই এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা নেই। ভেনেজুয়েলা সরকারও এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।

ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে শক্তিশালী সামরিক উপস্থিতি গড়ে তুলেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বলছে—এ উদ্যোগ মাদক পাচার রোধের অংশ। তবে একইসঙ্গে মার্কিন প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়েছে, প্রয়োজনে মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরাতেও তারা প্রস্তুত।

গত অক্টোবর নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছিল, উত্তেজনা কমাতে মাদুরো মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভেনেজুয়েলার তেলক্ষেত্রে বড় অংশীদারিত্বসহ নানা সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকার শর্তে অনড় থাকায় যুক্তরাষ্ট্র কয়েক সপ্তাহ আগেই আলোচনায় বিরতি দেয়।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প হঠাৎ করেই “যুদ্ধ প্রস্তুতি” ঘোষণা করেন। পাশাপাশি ভেনেজুয়েলা ও আশপাশের আকাশপথ “পুরোপুরি বন্ধ” করার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেন।

তবে এর মাধ্যমে তিনি ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন—তা তিনি স্পষ্ট করেননি। বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্য ভেনেজুয়েলার ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির অংশ হতে পারে।

মার্কিন–ভেনেজুয়েলা সম্পর্কের অস্থিরতা নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক সামরিক প্রস্তুতি, গোপন ফোনালাপ এবং ট্রাম্পের কঠোর অবস্থানের কারণে উত্তেজনা আরও বাড়ছে।

দুই রাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক সংঘাতের সম্ভাবনা আপাতত কম মনে হলেও রাজনৈতিক চাপ, অর্থনৈতিক স্বার্থ ও ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার কৌশল—সমগ্র পরিস্থিতিকে অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিচ্ছে।