শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

| ১ কার্তিক ১৪৩২

দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে ৬ দেশ: ডব্লিউএফপি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭:১৪, ১৬ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৯:২৮, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে ৬ দেশ: ডব্লিউএফপি

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, তহবিল সংকট ও সহায়তা কার্যক্রম কমে যাওয়ার কারণে ২০২৬ সালের মধ্যে গাজা, সুদান, ইয়েমেন, দক্ষিণ সুদান, সোমালিয়া ও আফগানিস্তান দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ বাস্তবতায় পড়ে যেতে পারে।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত ‘এ লাইফলাইন অ্যাট রিস্ক’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে ডব্লিউএফপি এই তথ্য জানায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ছয় দেশে বর্তমানে রেশন কমানো, খাদ্য বিতরণ স্থগিত এবং পুরো সম্প্রদায়কে সহায়তা থেকে বাদ দেওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে সংস্থাকে।

ডব্লিউএফপির জরুরি প্রতিক্রিয়া বিভাগের পরিচালক রস স্মিথ বলেন, “এই ছয়টি দেশে আমরা দেখছি মানুষ পুরোপুরি ত্রাণ সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। আমরা এক ভয়াবহ সংকটের দ্বারপ্রান্তে।”

সংস্থার খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি বিশ্লেষণ বিভাগের পরিচালক জ্যা-মার্টিন বাওয়ার জানান, ২০২৫ সালের মধ্যেই ১৩.৭ মিলিয়ন (১ কোটি ৩৭ লাখ) মানুষ জরুরি পর্যায়ের ক্ষুধা বা দুর্ভিক্ষের মুখে পড়তে পারে। এটা শুধু পরিসংখ্যান নয়- এগুলো বাস্তব। এসব দেশের মা, শিশু, পরিবারের বেঁচে থাকা নির্ভর করছে একমুঠো খাবারের ওপর।

ডব্লিউএফপির তথ্যমতে, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একই সময়ে গাজা ও সুদানের মতো দুটি অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার বাস্তব আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গাজায় যুদ্ধবিরতির পরও খাদ্য প্রবেশে বাধা ও তহবিল ঘাটতির কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষ খাদ্যবঞ্চিত হওয়ার পথে।

অন্যদিকে, সুদানকে ডব্লিউএফপি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আগস্ট মাসে তারা ৪১ লাখ মানুষকে সহায়তা দিতে পারলেও, তহবিল সংকটে এই সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না সংস্থাটি।

ডব্লিইএফপি জানায়, আফগানিস্তানে ১ কোটির মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ পাচ্ছে খাদ্য সহায়তা। শীতকালে এই সহায়তা কমে গিয়ে দাঁড়াবে ৮ শতাংশে।

দক্ষিণ সুদান ও সোমালিয়ায় বন্যা ও অর্থ সংকটের কারণে খাদ্য কর্মসূচি ব্যাপকভাবে কমে গেছে। সোমালিয়ায় এক বছরে জরুরি সহায়তা কমেছে ৭৫ শতাংশ।

মালি ও ইয়েমেনে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। 

ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, ২০২৫ সালে তাদের বৈশ্বিক সহায়তা কার্যক্রম ৪০ শতাংশ হ্রাস পাবে, যদি জরুরি তহবিল নিশ্চিত না হয়। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৬ সালে তা আরও সংকুচিত হতে পারে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৩১ কোটি ৯ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং ৪৪ কোটি মানুষ রয়েছে জরুরি ক্ষুধার পর্যায়ে।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন