শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

| ১ কার্তিক ১৪৩২

অস্ট্রেলিয়ার বন এখন কার্বন নিঃসরণকারী! 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮:৩৫, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

অস্ট্রেলিয়ার বন এখন কার্বন নিঃসরণকারী! 

অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুইন্সল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের রেইনফরেস্টগুলো এক ভয়ঙ্কর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের প্রথমবারের মতো এই বৃষ্টি-অরণ্যগুলো এখন কার্বন শোষণ না করে বরং নিঃসরণ করছে—একটি নতুন গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

প্রায় পাঁচ দশকের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা, দীর্ঘ খরা, বাতাসের আর্দ্রতা হ্রাস এবং ঘূর্ণিঝড়ের বাড়তি প্রকোপে গাছ মারা যাচ্ছে দ্রুত, কিন্তু নতুন গাছ জন্ম নিচ্ছে না সেই অনুপাতে।

ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. হান্না কার্লের নেতৃত্বাধীন এই গবেষণাটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার এ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বলেন, “বর্তমান বৈশ্বিক মডেলগুলো হয়তো বৃষ্টিবনের কার্বন শোষণ ক্ষমতাকে অতিমূল্যায়ন করছে। আমাদের গবেষণা বলছে, এই ক্ষমতা দ্রুত কমছে।”

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ২৫ বছর আগে থেকেই অস্ট্রেলিয়ার বৃষ্টি-অরণ্যগুলোর মৃত গাছের কাণ্ড ও শাখা) কার্বন শোষণ না করে নিঃসরণ শুরু করেছে। অর্থাৎ বনভূমি “কার্বন সিংক” থেকে “কার্বন সোর্স”-এ পরিণত হয়েছে।

ড. কার্লে সতর্ক করে বলেন, “গাছপালা পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করে জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষা করে। কিন্তু এটা হারানো মানে জলবায়ু সংকট আরও ত্বরান্বিত হবে।”

বিজ্ঞানী অধ্যাপক প্যাট্রিক মেয়ার বলেন, “এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অস্ট্রেলিয়ার এই পরিবর্তন ইঙ্গিত দেয় যে বিশ্বের অন্য বৃষ্টিবনগুলোও হয়তো একই পথে এগোচ্ছে।”

অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। সরকার সম্প্রতি ২০০৫ সালের তুলনায় আগামী এক দশকে ৬২ শতাংশ নিঃসরণ কমানোর অঙ্গীকার করলেও, জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর প্রকল্প যেমন উডসাইড -এর নর্থ ওয়েস্ট শেলফ আরও ৪০ বছর চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে, যা নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত আরেকটি জলবায়ু প্রতিবেদন বলছে, দেশটি ইতোমধ্যে ১.৫°C উষ্ণায়ন অতিক্রম করেছে, এবং কোনো সম্প্রদায়ই “ক্রমবর্ধমান ও যৌথ” জলবায়ু ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবে না।

এই গবেষণা তাই শুধু অস্ট্রেলিয়ার জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্য এক গুরুতর বার্তা—যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, পৃথিবীর প্রাকৃতিক কার্বন ব্যালান্স চিরতরে ভেঙে পড়তে পারে। সূত্র: বিবিসি

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন