শেখ হাসিনার রায়ের তারিখ ঘোষণা হতে পারে আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০০:০৭, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি : ফাইল
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার তারিখ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) নির্ধারণ হতে পারে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায়ের তারিখ নির্ধারণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল আদালতে হাজির না হওয়ায় পলাতক আসামি হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। অপরদিকে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন এবং আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এই মামলায় ৫৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন শহীদ আবু সাঈদের পিতা, জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, এবং দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
প্রসিকিউশন পক্ষ মোট পাঁচটি অভিযোগ আনে আসামিদের বিরুদ্ধে—
১️.১৪ জুলাই গণভবনে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের পর দেশব্যাপী নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যার অভিযোগ।
২️.হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে গণহত্যার অভিযোগ।
৩️.রংপুরে ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ।
৪️.রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয়জনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ।
৫️.আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ।
এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গত ১২ মে জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা, যার মোট পৃষ্ঠাসংখ্যা ৮ হাজার ৭৪৭। এর মধ্যে দালিলিক প্রমাণাদি ও শহীদদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
১৬ অক্টোবর প্রসিকিউশন তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে। ২২ অক্টোবর আসামিপক্ষের আইনজীবী ও রাষ্ট্রনিযুক্ত কাউন্সেল যুক্তি উপস্থাপন করেন। পরদিন ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রার্থনা করেন, যা পরে সমর্থন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন আসামিদের খালাস প্রার্থনা করেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল জানায়, রায়ের তারিখ ১৩ নভেম্বর ঘোষণা করা হবে।
রায় ঘোষণাকে ঘিরে ট্রাইব্যুনাল এলাকা ও আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, “রায়ের দিন নির্ধারণের এখতিয়ার পুরোপুরি ট্রাইব্যুনালের, তবে আমরা বিশ্বাস করি আগামীকালই তারিখ ঘোষণা হবে।”
সহিংসতার আশঙ্কা নিয়ে তিনি আরও বলেন, “এটি বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার প্রচেষ্টা, তবে আমরা থ্রেট টু জাস্টিস হিসেবে দেখি না।”
