বিজয়ী ভাষণে ট্রাম্পকে খোঁচা দিলেন মামদানি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:২২, ৫ নভেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিউইয়র্ক সিটি মেয়র জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত
নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন ডেমোক্র্যাট নেতা জোহরান মামদানি। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়লাভ করে তিনি শহরের ১১১তম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এবং একইসঙ্গে শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন। বিজয়ের পর দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরাসরি খোঁচা দেন তিনি।
নির্বাচনী জয় উদযাপনে মামদানি মঞ্চে উঠে বলেন,“ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমি জানি আপনি দেখছেন, আপনার জন্য আমার চারটি শব্দ—আপনি ভলিউমটা বাড়িয়ে নিন!”
তার এই বক্তব্যে উপস্থিত সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প আগেই হুমকি দিয়েছিলেন—মামদানি জিতলে ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে হোয়াইট হাউস “শহরের নিয়ন্ত্রণ নেবে”। এর জবাবেই নবনির্বাচিত মেয়রের এই পরোক্ষ কটাক্ষ।
মামদানি বলেন,“নিউইয়র্ক অভিবাসীদের শহরই থাকবে। অভিবাসীরাই এই শহর তৈরি করেছেন, অভিবাসীরাই এই শহর চালান, আর আজ থেকে শহরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন অভিবাসী।”
তার এই মন্তব্য ডেমোক্র্যাট ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করেছে।
ট্রাম্প অবশ্য মামদানির নাম না নিয়েই নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’–এ লিখেছেন,“ (শুরুটা হয়েই গেল)।”এই সংক্ষিপ্ত মন্তব্যকে বিশ্লেষকরা রাজনৈতিক ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন।
নির্বাচনের আগে থেকেই জনমত জরিপে এগিয়ে ছিলেন মামদানি। তিনি পান ৫০ শতাংশের বেশি ভোট, সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো পান ৪০ শতাংশের কিছু বেশি, আর রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া পান ৭ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট।
সোমবার ট্রাম্প কুয়োমোকে সমর্থন জানিয়ে বলেছিলেন,“স্লিওয়াকে ভোট দেওয়া মানেই মামদানিকে ভোট দেওয়া।”তবে স্লিওয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াতে অস্বীকৃতি জানান।
ডেমোক্র্যাট-সংখ্যাগরিষ্ঠ নিউইয়র্ক সিটিতে শেষবার কোনো রিপাবলিকান মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০০১ সালে। সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেই মামদানি একপ্রকার নিশ্চিত জয় পেয়েছেন।
তিনি কেবল শহরের রাজনীতিতেই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় রাজনীতিতেও নতুন প্রজন্মের প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাটদের মুখপাত্র হয়ে উঠছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মামদানির ঐতিহাসিক বিজয়কে কেন্দ্র করে পুরো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যেও এই জয়কে দেখা হচ্ছে সমঅধিকার ও অন্তর্ভুক্তির প্রতীকী সাফল্য হিসেবে।
