মাইলস্টোন বিপর্যয়
পাইলটের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬:০৬, ৫ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৬:১৭, ৫ নভেম্বর ২০২৫
মাইলস্টোন ঘটনায় যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে তদন্ত কমিটি। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—‘পাইলটের নিয়ন্ত্রণের বাইরে পরিস্থিতি চলে যাওয়া’।
বুধবার (৫ নভেম্বর) ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল এস এম কামরুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ১৫০ জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে ১৬৮টি তথ্য ও ৩৩টি সুপারিশ তৈরি করেছে।
তদন্তে দেখা গেছে, দুর্ঘটনার দিন ২১ জুলাই পাইলট প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালনার সময় হঠাৎ করে বিমান নিয়ন্ত্রণ হারায়। পরিস্থিতি দ্রুত জটিল হয়ে পড়ায় পাইলটের আর কোনো নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা সম্ভব হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পাইলটের দক্ষতা বা ইঞ্জিন ত্রুটির কারণে নয়, বরং প্রশিক্ষণ পর্যায়ে জটিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।’
৩৩টি সুপারিশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি
১.ঢাকা শহরের বাইরে বিমানবাহিনীর প্রাথমিক প্রশিক্ষণ স্থানান্তর।
২.বরিশাল ও বগুড়ার রানওয়ে সম্প্রসারণ করে নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার।
৩.রাজউকের বিল্ডিং কোড কঠোরভাবে বাস্তবায়ন এবং অনুমোদনহীন ভবনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা বন্ধ।
৪.অগ্নি ও উদ্ধারপথ বাড়াতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম তিনটি সিঁড়ি বাধ্যতামূলক করা।
তদন্তে আরও উঠে আসে, উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের ভবনটি রাজউকের বিল্ডিং কোড অনুযায়ী অনুমোদিত ছিল না।ভবনে ন্যূনতম তিনটি সিঁড়ি থাকার কথা থাকলেও সেখানে ছিল মাত্র একটি সিঁড়ি, সেটিও ভবনের মাঝ বরাবর। বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্যাপ্ত সিঁড়ি থাকলে হতাহতের সংখ্যা আরও কমানো সম্ভব হতো।
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রাজউকের নতুন সম্প্রসারিত এলাকায় বিল্ডিং কোড মানা নিশ্চিত করতে মনিটরিং টিম গঠনের নির্দেশও দেওয়া হয়।
গত ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত হন। ঘটনাটি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তোলে এবং তাৎক্ষণিকভাবে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
