তিন কারণে হারল ইউরোপের রাজারা
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:০১, ৫ নভেম্বর ২০২৫
চ্যাম্পিয়ান লিভারপুল ফুটবল দল। ছবি: লিভারপুল এফসি
অ্যানফিল্ড মানেই চমক। ম্যাচের আগে যেখানে সবাই রিয়াল মাদ্রিদকে ফেভারিট ধরেছিল, বাস্তবে দেখা গেল তার উল্টো চিত্র। শেষ আট ম্যাচের ছয়টিতে হারলেও লিভারপুল ঘরের মাঠে খেলল আগুনের মতো ফুটবল। শুরু থেকেই রিয়ালের ডিফেন্সকে চাপে রাখে তারা। গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া না থাকলে স্কোরলাইন আরও ভয়াবহ হতে পারত — অন্তত ৪-৫ গোল খেত লস ব্ল্যাঙ্কোসরা।
শেষ পর্যন্ত আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের হেডে পাওয়া গোলেই জয় নিশ্চিত করে লিভারপুল। আর এই জয়ের পেছনে ছিল তিনটি স্পষ্ট কারণ—
১. মাঝমাঠে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ
লিভারপুল শুরু থেকেই ম্যাচের রিদম নিজের হাতে নেয়। মিডফিল্ডে আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের নেতৃত্বে একের পর এক দারুণ পাস, কভারেজ আর প্রেসিংয়ে রিয়াল মাদ্রিদের মাঝমাঠ সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়ে। শুধু গোল নয়, পুরো ম্যাচে তিনি ছিলেন লিভারপুলের ‘প্লে ডিরেক্টর’। বল দখল, আক্রমণ গঠন, আর রিয়ালের আক্রমণ ঠেকানো—সবখানেই দাপট দেখিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন।
২. ভিনিসিয়ুসকে বোতলবন্দি করলেন কনর ব্র্যাডলি
রিয়ালের আক্রমণের প্রাণ ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে নিষ্প্রভ করে দেন লিভারপুলের তরুণ রাইটব্যাক কনর ব্র্যাডলি। দারুণ ট্যাকল ও পজিশন সেন্সে ভিনির গতি ও স্কিলকে পুরোপুরি নিরস্ত করেন তিনি। শুধু রক্ষণেই নয়, ব্র্যাডলি নিজে আক্রমণেও এগিয়ে এসে একাধিক সুযোগ তৈরি করেন। ফলাফল—রিয়ালের বাম দিক একপ্রকার নিশ্চুপ হয়ে পড়ে পুরো ম্যাচজুড়ে।
৩. ব্যর্থ এমবাপ্পে-বেলিংহাম যুগল
বল দখলে রিয়াল মাদ্রিদের ছিল প্রাধান্য—মোট ৬১ শতাংশ সময়। কিন্তু আক্রমণে ছিল নিস্তেজ। এমবাপ্পে ও বেলিংহাম ছিলেন প্রত্যাশার বাইরে নীরব। পুরো ম্যাচে রিয়ালের ‘এক্সজি’ ছিল মাত্র ০.৪৫—অর্থাৎ বাস্তবে গোল করার সুযোগই তৈরি করতে পারেনি দলটি। এই অদক্ষতা এবং লিভারপুলের গোছানো ডিফেন্সই রিয়ালের স্বপ্নভঙ্গের মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
একদা ইউরোপ দাপানো রিয়াল মাদ্রিদকে যেন অ্যানফিল্ডে ছোট দল মনে হচ্ছিল। লিভারপুলের এই জয় শুধু এক ম্যাচের নয়, আত্মবিশ্বাসেরও পুনর্জাগরণ। অন্যদিকে কার্লো আনচেলোত্তির রিয়ালকে ভাবতে হবে—মাঝমাঠে ভারসাম্য আর ফরোয়ার্ড লাইনের ধার ফিরে পেতে কী পরিবর্তন প্রয়োজন।
