একীভূত ৫ ইসলামি ব্যাংকের পর্ষদ বিলুপ্ত, বসছেন প্রশাসকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:৩৬, ৫ নভেম্বর ২০২৫
একীভূত ৫ ইসলামি ব্যাংক / ফাইল ছবি
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নজিরবিহীন পদক্ষেপ হিসেবে একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ বেসরকারি ইসলামি ব্যাংকের পর্ষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ বিকেল থেকেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন পাঁচজন কর্মকর্তা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. শওকত উল আলমকে এক্সিম ব্যাংকের প্রশাসক করা হয়েছে। নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদিউল আলম দিদার নিয়োগ পেয়েছেন সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে, আর মো. সালাহ উদ্দীন যাচ্ছেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে।
এছাড়া পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসেম দায়িত্ব নেবেন ইউনিয়ন ব্যাংকে এবং মকসুদুল আলম যাবেন গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে।
গত ৯ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে সংকটে থাকা পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংককে একীভূত করার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। ব্যাংকগুলো হলো— ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, এই একীভূতকরণের ফলে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী চাকরি হারাবেন না এবং কোনো আমানতকারীর অর্থও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
নতুন গঠিত ব্যাংকের নাম হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে দুটি সম্ভাব্য বিকল্প— ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক ও সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক।
প্রাথমিকভাবে এটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক হিসেবে চালু হবে, পরে ধাপে ধাপে মালিকানা বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা হবে।
প্রস্তাবিত ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা, আর পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ২০ হাজার কোটি টাকা—যার অর্ধেক নগদে এবং অর্ধেক সুকুক বন্ডের মাধ্যমে।
সুকুক হচ্ছে শরিয়াহভিত্তিক ইসলামী বন্ড, যা সুদনির্ভর বন্ডের বিকল্প। শব্দটি আরবি, অর্থ ‘আইনি দলিল’ বা ‘চুক্তিপত্র’।
অন্যদিকে, প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের আমানতকে শেয়ারে রূপান্তর করে ১৫ হাজার কোটি টাকা মূলধনে পরিণত করা হবে, যা হবে ‘বেইল-ইন’ প্রক্রিয়ার অংশ। এই প্রক্রিয়ায় আমানতকারীর ঋণের একাংশ শেয়ার হিসেবে রূপান্তরিত হয়।
