গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বছরে এফডিআইয়ে রেকর্ড ১৯.১৩% প্রবৃদ্ধি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:১৯, ৩ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) / ফাইল ছবি
বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম বছরে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগে (এফডিআই) রেকর্ড ১৯.১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে—যা শুধু দক্ষিণ এশিয়াই নয়, পুরো বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে এক অভূতপূর্ব ব্যতিক্রম হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
আজ সোমবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সাম্প্রতিক প্রকাশিত অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজনৈতিক রূপান্তর ও প্রশাসনিক পুনর্গঠনের পরেও বিদেশি বিনিয়োগের এই ঊর্ধ্বগতি বৈশ্বিক প্রবণতার সম্পূর্ণ বিপরীত। সাধারণত বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বিদেশি বিনিয়োগে আশঙ্কাজনক পতন দেখা যায়, কিন্তু বাংলাদেশ এই ধারা ভেঙে দিয়েছে আত্মবিশ্বাস ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।
বিশ্বব্যাংকের বিশ্লেষণ বলছে, সাম্প্রতিক দশকে যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশের অধিকাংশই পরবর্তী এক বছরে এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে ধস দেখেছে। উদাহরণ হিসেবে—
শ্রীলঙ্কায় (২০২২ সালের পর) এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯%,
চিলিতে (২০১৯ সালের পর) ২৫.৬৮%,
সুদানে (২০২১ সালের পর) ২৭.৬০%,
ইউক্রেনে (২০১৪ সালের পর) ৬১.২১%,
মিশরে (২০১১ সালের পর) ১০৭.৫৫% এবং ইন্দোনেশিয়ায় (১৯৯৮ সালের পর) কমেছে ১৬১.৪৯%।
এই ধারার বিপরীতে বাংলাদেশের ১৯.১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে—দেশটি এখন বৈশ্বিক বিনিয়োগ মানচিত্রে “পলিটিক্যাল রেজিলিয়েন্স”-এর এক নতুন মডেল হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন,“বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো—যে কোনো প্রতিকূল অবস্থা থেকে পুনরুদ্ধারের অসাধারণ ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান সেই বাস্তবতারই প্রমাণ। গণঅভ্যুত্থানের পর যেখানে অন্য দেশগুলো বিনিয়োগ হারিয়েছে, সেখানে আমরা উল্টো বৃদ্ধি দেখিয়েছি। সঠিক অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আন্তরিকতা, আর বেসরকারি খাতের অদম্য স্পৃহা—সব মিলিয়ে এ সাফল্য সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,“সব সমস্যার সমাধান আমরা করতে পারিনি, কিন্তু সদিচ্ছার ঘাটতি রাখিনি। আগামী সপ্তাহে বিডা থেকে পুরো বছরের একটি বিস্তারিত ‘আমলনামা’ (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে, যেখানে বিনিয়োগ পরিবেশের সংস্কার, বিদেশি আগ্রহ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরা হবে।”
