তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে অষ্টম দিনের শুনানি চলছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:১৩, ৫ নভেম্বর ২০২৫
হাইকোর্ট / ফাইল ছবি
সংবিধানে পুনরায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে করা আপিলের টানা অষ্টম দিনের শুনানি চলছে আজ। বুধবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ–এর নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
বিএনপির পক্ষে শুনানি করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, আর রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত রয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে ২১ অক্টোবর থেকে শুনানি শুরু হয়, যা চলেছে ২২, ২৩, ২৮, ২৯ অক্টোবর এবং ২ নভেম্বর পর্যন্ত। এই ধারাবাহিক শুনানিতে আদালত মূলত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের পটভূমি ও প্রভাব নিয়ে বিশদ আলোচনা করছেন।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে আইনজীবী এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট এ রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
তবে ২০০৫ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ২০১১ সালের ৩০ জুন সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাস করে, যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করা হয়। একই বছরের ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশের মধ্য দিয়ে এটি কার্যকর হয়।
২০২৫ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ‘সুজন’ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। তাঁদের মধ্যে আছেন তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
অন্যদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৬ অক্টোবর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর একই আবেদন করেন। এছাড়া নওগাঁর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিল করেন।
আজকের শুনানিতে আদালত আপিলকারীদের বক্তব্যের পর রাষ্ট্রপক্ষের মতামত গ্রহণ করছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই মামলার রায় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
