শেখ রেহানার বিরুদ্ধে প্লট দুর্নীতির মামলা
রাজউকের সাবেক সদস্য খুরশীদ আলম গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০:৩৭, ২ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: ওয়েবসাইট
রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ রেহানা, তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলায় রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
রবিবার (২ নভেম্বর) ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ মো. রবিউল আলম এই তিন মামলায় গ্রেপ্তারের আবেদন মঞ্জুর করেন। এ সময় আদালত আরও ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৯ নভেম্বর।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে করা তিন মামলায় একই আসামি খুরশীদ আলমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল।
দুদকের পক্ষ থেকে ৩০ অক্টোবর এই তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
শুনানিতে বিচারক অভিযোগ পড়ে শোনালে খুরশীদ আলম নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। এরপর আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, আজ সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (বেপজা সংযুক্ত) মোহাম্মদ ওসমান গনি, মোটর ক্লিনার উজ্জল হোসেন, গাজীপুরের কালীগঞ্জের সাবেক সাবরেজিস্ট্রার জাহিদুর রহমান, গুলশানের সাবেক সাবরেজিস্ট্রার রাকিবুল ইসলাম, কর বিভাগের সহকারী আইনজীবী হানিফ দিহিদার এবং রাজউকের অফিস সহকারী মো. আব্দুর রহীম।
এ পর্যন্ত শেখ রেহানা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দায়ের করা এই তিন মামলায় ২৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে দুদক।
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ:
২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর দুদক শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। তদন্তে উঠে আসে— ক্ষমতার অপব্যবহার ও পরস্পর যোগসাজশের মাধ্যমে ৬০ কাঠার জমি বরাদ্দ নেওয়া হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের ১০ মার্চ দুদক ছয়টি মামলায় অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয়।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সদস্য কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
দুদকের তদন্ত অব্যাহত:
দুদক বলছে, এই মামলাগুলোর তদন্তের আওতায় আরও কয়েকজন সাবেক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। পরবর্তী পর্যায়ে নতুন অভিযুক্ত যোগ হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে সংস্থাটি।
