ট্রাম্পের ইঙ্গিত : যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনকে ভূখণ্ড ছাড়তে হবে
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:৪১, ১৬ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৪:৫৩, ১৬ আগস্ট ২০২৫
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সম্ভাব্য সমাপ্তি নিয়ে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিক ঘণ্টার বৈঠকের পর ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন— যুদ্ধ বন্ধের শর্ত হিসেবে ইউক্রেনকে কিছু ভূখণ্ড ছাড় দিতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে। এ মন্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
বৈঠক ও ট্রাম্পের বার্তা
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) মস্কোয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন ট্রাম্প ও পুতিন। ট্রাম্প জানান, বেশ কিছু বিষয়ে তারা একমত হলেও বড় কিছু ইস্যুতে চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। পরবর্তীতে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট করেন, যুদ্ধ বন্ধের একমাত্র পথ হচ্ছে রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনের নির্দিষ্ট ভূখণ্ড হস্তান্তর।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা এগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং অনেক বিষয়ে একমত হয়েছি। আমি মনে করি আমরা যুদ্ধ শেষের খুব কাছাকাছি। ইউক্রেনকে এটি মেনে নিতে হবে।”
রাশিয়ার দাবি ও ইউক্রেনের বাস্তবতা
রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে দাবি করছে, ডনবাস অঞ্চল ও ক্রিমিয়া তাদের অধীনে থাকবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অবশ্য বারবার জানিয়েছেন, কোনো ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু ট্রাম্পের বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে ভূখণ্ড সমঝোতাই হতে পারে প্রধান শর্ত।
পুতিনকে প্রশংসা
ট্রাম্প পুতিনকে “শক্তিশালী” ও “কঠোর” ব্যক্তি আখ্যা দিয়ে বলেন, বৈঠকটি ছিল “উষ্ণ” ও “ইতিবাচক”। এই প্রশংসা পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প ইউক্রেনের ওপর চাপ তৈরি করছেন যাতে তারা রাশিয়ার শর্তে চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য হয়।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের মন্তব্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটো এবং ইউক্রেনপন্থী দেশগুলোর জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে। ইতিমধ্যেই ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে অনেকে বলছেন, ভূখণ্ড দিয়ে যুদ্ধ থামানো মানে রাশিয়ার আগ্রাসনকে পুরস্কৃত করা।
ট্রাম্পের এই ইঙ্গিত ভবিষ্যতের কূটনৈতিক সমাধানের রূপরেখা বদলে দিতে পারে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে— ইউক্রেন কি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ভূখণ্ড ছাড়তে রাজি হবে, নাকি যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠবে?
