জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হত্যা
‘খুন করে ফেলছে’: ছাত্রীর খুদে বার্তার বিবরণ দিলেন সৈকত
আদালত প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:৫৮, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইন হত্যা মামলায় দুইজন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন—জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জুবায়েদের ক্যাম্পাসের ঘনিষ্ঠ ছোট ভাই সৈকত হোসেন এবং নিহতের ছাত্রীর মামা ডা. ওয়াহিদুর রহমান।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দীন বুধবার (১৯ নভেম্বর) তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বংশাল থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন এ জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেছিলেন।
জবানবন্দিতে সৈকত জানান, গত ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টা ৫৮ মিনিটে জুবায়েদের ছাত্রী প্রথমে তাকে মেসেঞ্জারে জিজ্ঞেস করেন, “ভাইয়া কই তুমি?”
সৈকত জানান তিনি ক্যাম্পাসে আছেন।
এরপর ছাত্রী বলে, তার স্যারের আম্মুর নাম্বার লাগবে।
কী হয়েছে জানতে চাইলে ছাত্রী হঠাৎ লিখেন— “ভাইরে কে জানি মাইরা ফেলছে।”
সৈকত হতবাক হয়ে ছাত্রীর কাছেই জানতে চান— “মাইরা ফেলছে বলতে?”
মেয়েটি তখন লিখে— “খুন করে ফেলছে।”
তিনি আরও জানান, এরপর তিনি ছাত্রীর ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, কিন্তু তাকে আর পাননি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইদের পুরো ঘটনা জানান।
দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দিতে ডা. ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় তার স্ত্রী ফোনে খবর পান— তাদের ভবনের সিঁড়িতে একজন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি দরজা খুলে নিচে গিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত একজন যুবক সিঁড়ির মাঝে পড়ে আছেন।
চিৎকারে বাড়ির মানুষ জড়ো হলে সবাই শনাক্ত করেন— এটাই তার ভাগ্নির প্রাইভেট টিউটর জুবায়েদ।
তিনি জানান, তাৎক্ষণিকভাবে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
জবানবন্দিতে ডা. ওয়াহিদুর জানিয়েছেন, ঘটনার পর তিনি জানতে পারেন তার ভাগ্নির সঙ্গে আরেক যুবকের প্রেম ছিল। একই সময়ে জুবায়েদের সঙ্গেও মেয়েটির সম্পর্ক তৈরি হয়।
এই দ্বন্দ্বের জের ধরেই ছাত্রীর আগের প্রেমিক ও তার বন্ধুরা জুবায়েদকে হত্যা করে পালিয়ে যায় বলে তিনি জবানবন্দিতে জানান।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় টিউশন করতে গিয়ে ছাত্রীর বাসায় জুবায়েদ খুন হন। ছাত্রী নিজেই প্রথমে মেসেঞ্জারে সংবাদ দেয়— “জুবায়েদ স্যার খুন হয়ে গেছে।”
২১ অক্টোবর নিহতের ভাই এনায়েত হোসেন বাদী হয়ে বংশাল থানায় মামলা করেন। এজাহারে তিনি ছাত্রীর প্রেমিক, ছাত্রী এবং প্রেমিকের বন্ধুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করেন।
২১ অক্টোবরই তিনজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং বর্তমানে তারা কারাগারে।
