অগ্রণী ব্যাংকের ১৮৯ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি মামলা
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮:১০, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। ছবি: সংগৃহিত
অগ্রণী ব্যাংকের ১৮৯ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি মামলায় ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদনের ভিত্তিতে বুধবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।
এর আগে বুধবার সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে বিকেলে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ জালাল।
আসামির পক্ষ থেকে কোনো জামিন আবেদন করা হয়নি।
দুদক প্রসিকিউটর খন্দকার মশিউর রহমান জানান, শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
২০২৫ সালের ১৬ জুলাই দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ১১ মাসের মাথায় ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন ওবায়েদ উল্লাহ মাসুদ। এর আগে তিনি সোনালী ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংকের এমডি ছিলেন। আরও আগে অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকা সার্কেল–২ এর মহাব্যবস্থাপক ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তার দায়িত্বকালীন বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম, সন্দেহজনক লেনদেন ও নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগের বিশদ প্রতিবেদন দুদকে পাঠায়। এর ভিত্তিতেই দুদক ব্যবস্থা নেয়।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুদক অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এমডি সৈয়দ আব্দুল হামিদ, ওবায়েদ উল্লাহ মাসুদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। অভিযোগ—চট্টগ্রামের আছাদগঞ্জ শাখা থেকে নিয়ম ভেঙে ঋণ অনুমোদন, শর্ত না মানা এবং ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মোস্তাক আহমেদ, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার ও মহাব্যবস্থাপক; মো. আবুল হোসেন তালুকদার, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক; মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক; তাজরীনা ফেরদৌসী, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক; মো. মোফাজ্জল হোসেন, সাবেক মহাব্যবস্থাপক।
এ ছাড়া চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জভিত্তিক নুরজাহান গ্রুপের চার পরিচালককে আসামি করা হয়। তারা হলেন- মিজানুর রহমান (মিজান ট্রেডার্স), জহির আহমেদ (জাসমীর ভেজিটেবল ওয়েল লিমিটেডের এমডি), টিপু সুলতান ও ফরহাদ মনোয়ার।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মেসার্স মিজান ট্রেডার্স নামে ছোলা ও গম আমদানির জন্য ঋণ অনুমোদন করা হয়। কিন্তু প্রকৃত সুবিধাভোগী ছিলেন নুরজাহান গ্রুপ ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাসমীর ভেজিটেবল ওয়েল লিমিটেড।
মিজানুর রহমানকে শুধু নামমাত্র মালিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
নুরজাহান গ্রুপের একটি বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয় এবং অ্যাকাউন্ট পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় জহির আহমেদকে। পরে শর্ত পালন না করেই সুপরিকল্পিতভাবে ঋণের টাকা তোলা হয়।
মূল ৫১ কোটি টাকার ঋণ এখন সুদে-আসলে দাঁড়িয়েছে ১৮৯ কোটি ৮০ লাখ টাকায়।
দুদকের অভিযোগ— এটি ছিল সুপরিকল্পিত একটি করপোরেট প্রতারণা, যাতে ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন।
