পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ, আর্থিক সংকটে এয়ার ইন্ডিয়া
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:২২, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
আর্থিক সংকটে এয়ার ইন্ডিয়া। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান ভারতীয় এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় তীব্র আর্থিক সংকটে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। রুট বদলের কারণে জ্বালানি ব্যয় আকাশছোঁয়া, যাত্রাসময় বেড়ে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতি কমাতে চীনের শিনজিয়াং অঞ্চলের অত্যন্ত সংবেদনশীল সামরিক আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি আদায়ে ভারত সরকারের কাছে সক্রিয় লবিং শুরু করেছে টাটা গ্রুপ ও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের মালিকানাধীন এয়ার ইন্ডিয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রয়টার্স, কোম্পানির অভ্যন্তরীণ নথির উদ্ধৃতি দিয়ে।
গত জুনে গুজরাটে লন্ডনগামী একটি বোয়িং ড্রিমলাইনার বিধ্বস্ত হয়ে ২৬০ জন নিহত হওয়ার পর নিরাপত্তা জটিলতায় এয়ার ইন্ডিয়ার কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সাময়িকভাবে বাতিল হয়। এর ঠিক পরেই বাড়তি সংকট তৈরি করে পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ হয়ে যাওয়া। রুট দীর্ঘ হওয়ায় কিছু ফ্লাইটে জ্বালানি ব্যয় ২৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপগামী রুটে যাত্রাসময় তিন ঘণ্টা পর্যন্ত দীর্ঘ হচ্ছে।
রয়টার্স পর্যালোচনা করা নথিতে বলা হয়েছে—রুট সংক্ষিপ্ত করে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে ভারত সরকারের উচিত চীনের কাছে শিনজিয়াংয়ের হোটান, কাশগর ও উরুমচি দিয়ে বিকল্প আকাশপথ ও জরুরি অবতরণ সুবিধার অনুমতি চাওয়া। নথিটি আরও জানায়, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় এয়ার ইন্ডিয়ার বার্ষিক কর-পূর্ব ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ৪৫৫ মিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের মোট ক্ষতির (৪৩৯ মিলিয়ন ডলার) চেয়েও বেশি।
তবে যে আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি এয়ার ইন্ডিয়া চাইছে, সেটি ঘেরা ২০ হাজার ফুট উচ্চতার দুর্গম পর্বতমালায়—জরুরি ডিকমপ্রেশন হলে অবতরণের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। উপরন্তু এটি নিয়ন্ত্রিত চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির পশ্চিমাঞ্চলীয় থিয়েটার কম্যান্ডের অধীনে, যেখানে রয়েছে শক্তিশালী মিসাইল প্রতিরক্ষা, ড্রোন নজরদারি এবং উচ্চতর সামরিক তৎপরতা। কিছু বিমানবন্দর আবার বেসামরিক ও সামরিক যৌথ ব্যবহারের।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের সর্বশেষ রিপোর্ট বলছে—এই থিয়েটার কম্যান্ডের প্রধান দায়িত্বের একটি হলো ভারত-চীন সম্ভাব্য সংঘাতের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। অন্যদিকে ওপেন-সোর্স গোয়েন্দা বিশ্লেষক ড্যামিয়েন সাইমন জানিয়েছেন, চীন সম্প্রতি হোটান বিমানঘাঁটির আরও সম্প্রসারণ করেছে, যা অঞ্চলটির কৌশলগত গুরুত্ব বাড়িয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে—তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়, প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে। ভারত, চীন ও পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ—কেউই রয়টার্সের প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
