জেলহত্যা দিবস আজ
জাতির চার নেতার স্মরণে শোক ও শ্রদ্ধায় বাংলাদেশ
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১১:৩৩, ৩ নভেম্বর ২০২৫
আজ ৩ নভেম্বর—বাংলা জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কময় দিন, জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় জাতির মুক্তির নেতৃত্বদানকারী চার নেতাকে—মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর মাত্র তিন মাসের মধ্যে জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় সংঘটিত হয় এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। স্বাধীনতার স্থপতিদের পর জাতির পথপ্রদর্শক এই চার নেতাকে কারাগারের অভ্যন্তরে গুলি ও বেয়নেট দিয়ে হত্যা করা হয়—যা ইতিহাসে এক নজিরবিহীন বর্বরতা হিসেবে চিহ্নিত।
এই হত্যাকাণ্ডের পরদিন, ১৯৭৫ সালের ৪ নভেম্বর, তৎকালীন কারা উপমহাপরিদর্শক কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ২১ বছর তদন্ত স্থবির থাকার পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় মামলাটি সচল করে। ২৯ বছর পর, ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর, ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত রায় ঘোষণা করেন।
‘জেলহত্যা মামলা’ নামে পরিচিত এই মামলায় আদালত তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে অধিকাংশই আজও পলাতক। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ ২০২০ সালের এপ্রিলে দেশে ফেরার পর গ্রেপ্তার হন এবং তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এই দিনটি জাতির জন্য গভীর শোক ও ভাবনার প্রতীক। প্রতি বছর এই দিনে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সংগঠন চার জাতীয় নেতার আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নানা কর্মসূচি পালন করে।
