শহীদ জাতীয় চার নেতা
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬:৪৫, ৩ নভেম্বর ২০২৫
আজ ইতিহাসের পাতায় স্মরণ করা হয় একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে—বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্থপতি থেকে শুরু করে বিশ্বের শিল্প ও সংস্কৃতির অগ্রদূতেরা—যাঁরা আজকের দিনেই ইতিহাসে চিরবিদায় নিয়েছিলেন।
শহীদ জাতীয় চার নেতা (১৯৭৫)
১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের চার নেতাকে—
তাজউদ্দীন আহমদ, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে প্রবাসী সরকার গঠন ও পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রবাসী সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং একনিষ্ঠ মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক।
মোহাম্মদ মনসুর আলী, স্বাধীন বাংলাদেশের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী ও রাজনীতির এক সৎ প্রতীক।
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা।
এই চারজনের সম্মিলিত ত্যাগ ও নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধের প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে ওঠে। কারাগারের অন্ধকারে তাঁদের হত্যা জাতীয় জীবনের এক গভীর ক্ষত হিসেবে আজও স্মরণীয়।
মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা (১৯৭৭)
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা ও শিক্ষায় অসামান্য ভূমিকার জন্য বিখ্যাত এই বিজ্ঞানী ছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষা কমিশনের প্রধান। রসায়নবিদ, লেখক ও শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি প্রজন্মকে আলোকিত করেছেন।
ফ্র্যাডেরিক চালমার্স বোর্ন (১৯৭৭)
ব্রিটিশ শাসনামলে পূর্ব বাংলার প্রথম গভর্নর, যিনি ১৯৪৭ সালের পরবর্তী রাজনৈতিক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আঁরি মাতিস (১৯৫৪)
ফ্রান্সের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর, যিনি রঙের ব্যবহার ও আধুনিক শিল্পধারার বিকাশে অনন্য অবদান রেখেছেন। তার শিল্পভাষা এখনো বিশ্বের শিল্পবিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষণীয়।
শশধর মুখার্জী (১৯৯০)
বলিউড চলচ্চিত্র জগতের অগ্রদূত প্রযোজক ও পরিচালক। তাঁর হাতে গড়া স্টুডিও ও চলচ্চিত্র শিল্প ভারতের সিনেমা ইতিহাসে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল।
বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র (১৯৯১)
বেতার সম্প্রচারক, নাট্যকার ও অভিনেতা—‘মহিষাসুরমর্দিনী’ পাঠের মাধ্যমে লক্ষ কোটি বাঙালির হৃদয়ে আজও জীবন্ত। তার কণ্ঠের আবেগ আজও মহালয়ার সকালে অমর প্রতিধ্বনি।
ইয়ান বান্নেন (১৯৯৯)
স্কটল্যান্ডের বহুমাত্রিক অভিনেতা, মঞ্চ ও পর্দায় সমান পারদর্শী। বিশ্ব চলচ্চিত্রে তাঁর স্মরণীয় ছাপ আজও বিদ্যমান।
গর্ডন টুলক (২০১৪)
আমেরিকান অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক, পাবলিক চয়েস তত্ত্বের অন্যতম প্রবক্তা, যিনি অর্থনীতি ও রাজনীতির সম্পর্ক বিশ্লেষণে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপহার দেন।
আবদুর রহমান বিশ্বাস (২০১৭)
বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি (১৯৯১–১৯৯৬) ও কূটনীতিক। শিষ্টাচার, সংযম ও সংবিধান মেনে চলার জন্য তিনি রাজনীতির মঞ্চে ছিলেন এক শান্ত প্রতীক।
৩ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘জেল হত্যা দিবস’। জাতির এই অমর সন্তানদের স্মরণে দেশজুড়ে আজ নানা কর্মসূচি পালিত হয়—তাদের আত্মত্যাগ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
