স্বৈরাচারী নই, অভিযোগ ভিত্তিহীন:মুখ খুললেন জ্যোতি
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:৪৫, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতিকে ঘিরে কয়েক মাস ধরেই চলছে নেতৃত্ব বিতর্ক। জুনিয়রদের ওপর শারীরিক শাসন, সিনিয়রদের সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততা—এমন নানা অভিযোগে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন তিনি।
বর্তমানে শিনবোনের চোট থেকে সেরে উঠতে বিকেএসপিতে পুনর্বাসন নিচ্ছেন জ্যোতি। সেখান থেকেই ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রত্যেকটি অভিযোগের জবাব দিয়েছেন শান্ত কিন্তু দৃঢ় কণ্ঠে।
জ্যোতি জানান, তার পুনর্বাসন সঠিকভাবে এগোচ্ছে। তিন–চার মাস ধরে চোট থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন দলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকার দায়বদ্ধতা থেকে।
তার ভাষায়—‘এই বিশ্বকাপটা আমার অনুকূলে ছিল না। কঠোর পরিশ্রম করেও পারফর্ম করতে পারিনি। স্বাভাবিক অবস্থায় থাকলে হয়তো আরও দুইটি ম্যাচ জিততে পারতাম।’
চিকিৎসকদের পরামর্শে চার–ছয় সপ্তাহ বিশ্রাম নিতে বলা হলেও নিজ জেলা শেরপুরে সুবিধা না থাকায় তিনি বিকেএসপিতে রিহ্যাব করছেন।
ড্রেসিংরুমে ‘স্বৈরাচারী আচরণের’ অভিযোগ সরাসরি নাকচ করেছেন জ্যোতি। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন—‘আমি কোনোভাবেই স্বৈরাচারী নই। কে এসব বলছে এবং কেন বলছে—এখন পরিষ্কার।’
সিনিয়র ক্রিকেটার জাহানারা আলম ও রুমানা আহমেদকে দল থেকে বাদ দেওয়ার জন্য ‘সিন্ডিকেট’ করার অভিযোগও উড়িয়ে দেন তিনি।
জ্যোতি জানান, ২০২১ সালে অধিনায়ক হয়েও ২০২৩ অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে পর্যন্ত তাকে নির্বাচক বৈঠকে রাখা হতো না। দল ঘোষণার আগ পর্যন্ত একাদশ নিয়েও জানতে পারতেন না।
নিউজিল্যান্ড সফরের একটি ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিনিয়র সালমা খাতুন একবার তাকে বলেছিলেন—‘তুই আমাদের বসিয়ে রাখলি?’
জ্যোতি বলেন, তিনি তখন জানিয়ে দেন যে সিদ্ধান্ত তার নয়। উত্তরে শুনতে হয়—‘তাহলে তুই শুধু টস করতেই ক্যাপ্টেন?’
জ্যোতির মতে, সমস্যার মূল কারণ ছিল গ্রহণযোগ্যতার সংকট। তিনি বলেন, ‘আমাকে অধিনায়ক করার পরই চার–পাঁচজন ঠিক করে ফেলেছিলেন যে তারা একজন জুনিয়রের অধীনে খেলবেন না।’
জুনিয়রদের গালিগালাজ বা মারধর করার অভিযোগকে তিনি ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ বলেছেন।
মুর্শিদাকে চড় মারার বিষয়ে বলেন—‘সেটাও ভুল। তখন আমরা ভিন্ন দলে ছিলাম, কথাই হতো না।’
শ্রীলঙ্কায় মারুফাকে ধমক দেওয়ার ঘটনাটিকে ‘বিকৃতভাবে ছড়ানো’ বলে উল্লেখ করেন জ্যোতি। তার দাবি, গুরুত্বপূর্ণ সময়ের ক্যাচ ফেলে দেওয়ার হতাশায় মারুফা নিজেই কেঁদেছিলেন—তার কথায় নয়।
আস্থা সংকটই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন অধিনায়ক।
তিনি বলেন—‘সিনিয়র–জুনিয়রের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভালোবাসা, সমর্থন বা সম্মান জোর করে পাওয়া যায় না—অর্জন করতে হয়। সেটাই করতে চাই।’
আগামী ভারত সিরিজ সামনে রেখে তিনি দলকে নিয়ে নতুনভাবে আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করছেন।
