ডাকসুর তিন নেতার বিবৃতি
শেখ হাসিনার বিচার দাবি, ‘সেফ এক্সিটের’ বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪:২১, ১১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৬:১০, ১১ অক্টোবর ২০২৫
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সংঘটিত গুম, খুন, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস এস এম ফরহাদ ও এজিএস মহিউদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, ‘বিগত আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত গুম ও খুনের ঘটনাগুলো বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, গুম কমিশনের প্রতিবেদনে ইতোমধ্যে ১৮০০-এর বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। গুম ও খুনের শিকারদের মধ্যে রয়েছেন সাধারণ নাগরিক, নারী, শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী। এমনকি শিশু পর্যন্ত এই নৃশংসতার শিকার হয়েছে।
ডাকসু অভিযোগ করে বলেছে, ‘এই অপরাধে কেবল শেখ হাসিনা বা তার রাজনৈতিক মহলই নয়, বরং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), র্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও সরাসরি জড়িত ছিলেন। ‘আয়নাঘর’-এর মতো গোপন বন্দিশালায় চালানো অমানবিক নির্যাতন সভ্য সমাজের জন্য লজ্জাজনক।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গুম কমিশনের তথ্যে উদ্বেগজনকভাবে উঠে এসেছে—একটি পার্শ্ববর্তী দেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল এসব গুম-খুনে, যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধানসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ডাকসু এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, ‘এটি দীর্ঘদিনের বেদনা ও বিক্ষোভে আশার আলো জাগিয়েছে, তবে এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়।’
ডাকসু দাবি জানিয়েছে—গুম-খুনের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা ও তার প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের দ্রুত আইনের মুখোমুখি করা হোক। পাশাপাশি ডিজিএফআই, র্যাবসহ সংশ্লিষ্ট সামরিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদেরও বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।
বিবৃতিতে বলা হয়, গুম কমিশনের তদন্ত স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে হতে হবে যাতে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ন্যায়বিচার পায়। অপরাধীদের দায়মুক্তি দেওয়ার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ সোচ্চার থাকবে বলে সতর্ক করে ডাকসু।
ডাকসু আরও জানায়, ‘প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হলে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে আসবে না। বরং অপরাধীদের বিচার এই বাহিনীগুলোর মর্যাদা ও বিশ্বাসযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি করবে।’
