গাজার প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য ধ্বংসের মুখে
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০০:৩৬, ১৮ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০০:৩৯, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: আনাদোলু এজেন্সি
ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসনে গাজার সাংস্কৃতিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য ভয়াবহ ধ্বংসের মুখে পড়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মামলুক যুগের ঐতিহাসিক কাসর আল-বাসা প্রাসাদসহ তিন শতাধিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একই সঙ্গে জাদুঘরে সংরক্ষিত বিশ হাজারের বেশি দুর্লভ প্রত্নতত্ত্ব বস্তু নিখোঁজ হয়ে গেছে।
সরকারি তথ্যমতে, ইসরায়েলি বাহিনী ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকার ৩১৬টির বেশি প্রত্নতত্ত্ব স্থল ও স্থাপনা পুরোপুরি বা আংশিক ধ্বংস করেছে। এগুলোর অধিকাংশই মামলুক ও অটোমান যুগের স্থাপনা। কিছু স্থাপনার ইতিহাস ছুঁয়ে আছে প্রাক-ইতিহাস থেকে বাইজেন্টাইন যুগ পর্যন্ত।
গাজা সিটির পুরনো এলাকায় অবস্থিত মামলুক আমলের কাসর আল-বাসা প্রাসাদও রেহাই পায়নি। ইউনেসকো তালিকাভুক্ত এই ঐতিহাসিক স্থাপনার প্রায় সত্তর ভাগ ধ্বংস হয়েছে সাম্প্রতিক হামলায়।
বেথলেহেম ভিত্তিক সংস্কৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ হামুদা আল-দাহদার জানান, ধ্বংসস্তূপের নিচে ছড়িয়ে থাকা প্রত্নতত্ত্ব বস্তু উদ্ধার করতে স্থানীয়রা এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের প্রধান ইসলামিল আল-সাওয়াবতে বলেন, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনের ইতিহাস ও পরিচয় মুছে ফেলতে এই ঐতিহ্য ধ্বংস করছে। তিনি জানান, জাদুঘরে সংরক্ষিত প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে অটোমান আমল পর্যন্ত নানা যুগের বিশ হাজারের বেশি প্রত্নতত্ত্ব বস্তু যুদ্ধের মধ্যে নিখোঁজ হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিটি প্রত্নত্ত্ব বস্তু ফিলিস্তিনের সভ্যতার একেকটি অধ্যায়ের সাক্ষী। এসব নিখোঁজ হওয়া শুধু একটি জাতির ইতিহাসের ওপর আঘাত নয়, মানবতার সামষ্টিক ঐতিহ্যের জন্যও ভয়াবহ ক্ষতি।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে গাজা দখল করে এবং ১৯৯৪ সালে প্রত্যাহারের পর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ কাসর আল-বাসা পুনর্নির্মাণ করে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। ২০০৫ সালে ইসরায়েল একতরফাভাবে গাজা থেকে বসতি প্রত্যাহার করে। কিন্তু সর্বশেষ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আবারও ঐতিহাসিক এই স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
