৩ দিনের কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন ৭ কলেজের শিক্ষকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২:৫৩, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকার সাত কলেজের শিক্ষকদের তিন দিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা । ছবি: সংগৃহিত
ঢাকার সাত কলেজের শিক্ষকেরা আগামীকাল মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) থেকে তিন দিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি–এর নামে ভর্তির নিশ্চায়ন ও ক্লাস শুরুর যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, তা আইনসিদ্ধ নয়—এই অভিযোগ তুলে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা কলেজ মিলনায়তনে এক জরুরি সভায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান পরীক্ষাগুলো কর্মসূচির বাইরে থাকবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ জানানো হয়।
শিক্ষকদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৬ নভেম্বর প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ‘অন্তর্বর্তী প্রশাসক’ এক ঘোষণায় ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন ১৭–২০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করে ২৩ নভেম্বর ক্লাস শুরুর নির্দেশ দেন।
কিন্তু সাত কলেজের শিক্ষকরা বলেছেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তাই শিক্ষকেরা কোনোভাবেই এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন না। কারণ তারা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং সরকারিভাবে কলেজ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত।
শিক্ষকরা জানান, তাদের মতে, এই বিজ্ঞপ্তি আইনগত অসঙ্গতি ও প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি করবে।
সভায় শিক্ষকরা সাত কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।
শিক্ষকরা মনে করছেন, প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ‘অন্তর্বর্তী প্রশাসক’ এক ঘোষণায় এই দীর্ঘদিনের সংকট আরও জটিল হলো।
শিক্ষকরা জানান, ঢাকার এই সাত কলেজ ঘিরে অনেক দিন ধরেই সংকট চলছে। ২০১৭ সালে যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়াই এই সাত কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। সরকারি এই কলেজগুলো হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত করার আগেই অধিভুক্তি বাতিল করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।
এখন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে প্রশাসক করে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় সাত কলেজের কার্যক্রম চলছে। সম্প্রতি এসব কলেজ একীভূত করে সরকার যে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা করছে, তার কাঠামো নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন।
এ নিয়ে নতুন যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা কাটেনি। বরং নতুন নতুন সংকট সামনে আসছে। প্রস্তাবিত কাঠামোর বিরোধিতা করে শিক্ষকেরা এর আগে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছিলেন। এখন টানা তিন দিনের কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন।
