বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫

| ১২ ভাদ্র ১৪৩২

পেরুর স্বীকৃতি : স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে দূর মহাদেশের শক্তিশালী কণ্ঠ

সমাজকাল

প্রকাশ: ১৩:৪৭, ১ আগস্ট ২০২৫

পেরুর স্বীকৃতি : স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে দূর মহাদেশের শক্তিশালী কণ্ঠ

সমাজকাল ডেস্ক ১৯৭২ সাল। স্বাধীনতার রক্তাক্ত যুদ্ধের ক্ষত তখনও শুকায়নি। বিশ্বমঞ্চে নবীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ তখন স্বীকৃতি পেতে লড়ছে সার্বভৌমতার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য। ঠিক এমন সময় দক্ষিণ আমেরিকার একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র—পেরু—বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। এই ঘোষণা বাংলাদেশের জন্য ছিল এক ঐতিহাসিক প্রাপ্তি, যা দূর মহাদেশ থেকে আসা এক অসাধারণ কূটনৈতিক বার্তা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। এর পরপরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ একে একে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে শুরু করে। প্রথম স্বীকৃতি আসে ভুটান থেকে, এরপর ভারত, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশের স্বীকৃতি মিললেও, দক্ষিণ আমেরিকা থেকে পেরুর স্বীকৃতি ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। পেরু বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ১৯৭২ সালে, যখন বিশ্বের অনেক দেশই এখনও পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবের কারণে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। পেরুর সে সময়কার নেতৃত্ব ছিল রাজনৈতিকভাবে প্রগতিশীল ও আন্তর্জাতিক সংহতির পক্ষে, যা একটি নতুন রাষ্ট্রের স্বপ্নকে সাহস ও সম্মান এনে দেয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ-পেরু কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা পায়, যা দীর্ঘদিন ধরে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির ভিত্তিতে টিকে আছে। যদিও এই সম্পর্ক বাণিজ্যিক বা ভৌগোলিক দিক থেকে খুব ঘনিষ্ঠ না হলেও, ইতিহাসে এটি একটি সম্মানজনক দৃষ্টান্ত হিসেবে গণ্য হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। একেকটি স্বীকৃতি ছিল যেন একেকটি আন্তর্জাতিক আশ্বাস—"তোমরা একা নও"। পেরুর সেই স্বীকৃতি তাই শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণাই ছিল না, ছিল বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বসম্প্রদায়ের সহানুভূতির একটি সুদূর বার্তা। আজ যখন বাংলাদেশ বিশ্ব কূটনীতির জটিল বাস্তবতায় নিজের অবস্থান তৈরি করছে, তখন এই ধরনের ঐতিহাসিক সম্পর্কগুলো নতুনভাবে মূল্যায়নের দাবি রাখে।

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ: