বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫

| ১২ ভাদ্র ১৪৩২

মৃত্যুদিনে স্মরণ : ইতিহাসে ১ আগস্টে প্রয়াত বিশিষ্টজনেরা

সমাজকাল

প্রকাশ: ১৩:৩৩, ১ আগস্ট ২০২৫

মৃত্যুদিনে স্মরণ : ইতিহাসে ১ আগস্টে প্রয়াত বিশিষ্টজনেরা

সমাজকাল ডেস্ক ১ আগস্ট, ইতিহাসের পাতায় একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনে নানা সময়ে বিদায় নিয়েছেন বিশ্ব ইতিহাস ও সংস্কৃতির নানা স্তম্ভপ্রতিম ব্যক্তিত্ব। তাঁদের অবদান এখনও আমাদের সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে প্রবলভাবে অনুরণিত। সমাজকালের এই আয়োজনে জানুন, কারা ছিলেন এই দিনের প্রয়াত মহান মানুষ। মার্ক অ্যান্টনি (৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) রোমান সাম্রাজ্যের অন্যতম প্রভাবশালী জেনারেল এবং রাজনীতিক। তিনি ছিলেন জুলিয়াস সিজারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং পরবর্তীকালে ক্লিওপেট্রার প্রেমিক। রোমান ইতিহাসে তাঁর রাজনৈতিক ও সামরিক কৌশলের জন্য আজও তিনি আলোচনার বিষয়। দ্বারকানাথ ঠাকুর (১৮৪৬) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা, বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা। তিনি ব্যবসা, শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ইউরোপীয় ধাঁচে গঠিত নতুন সমাজচিন্তার এক রূপকার ছিলেন তিনি। কনরাড ডুডেন (১৯১১) জার্মান ভাষার ব্যাকরণ ও বানানের আধুনিক রূপদাতা। তাঁর কাজ আজও জার্মান ভাষার প্রাথমিক শিক্ষা ও অভিধানে গুরুত্ব সহকারে বিবেচিত। বাল গঙ্গাধর তিলক (১৯২০) ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। ‘স্বরাজই আমার জন্মসিদ্ধ অধিকার’ — তাঁর এই উক্তি ভারতীয় রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তিনি ছিলেন সংস্কৃতজ্ঞ, আইনজ্ঞ এবং দুর্দান্ত বক্তা। ম্যানুয়েল এল. কুয়েজন (১৯৪৪) ফিলিপিন্সের প্রথম কমনওয়েলথ প্রেসিডেন্ট। তাঁর নেতৃত্বেই ফিলিপিন্সে আধুনিক প্রশাসন কাঠামোর সূচনা ঘটে। স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কাণ্ডারি হিসেবেও স্মরণীয়। জহর রায় (১৯৭৭) বাংলা চলচ্চিত্রের বিখ্যাত কৌতুকাভিনেতা, যিনি নিজের অভিনয়শৈলী দিয়ে দর্শকের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছিলেন। ‘গল্প হলেও সত্যি’ বা ‘ভানু গোয়েন্দা’ সিনেমায় তাঁর অভিনয় আজও ক্লাসিক। জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী (১৯৮২) বাংলা সাহিত্যের নিরীক্ষাধর্মী লেখক। তাঁর লেখা প্রান্তিক মানুষের জীবনঘনিষ্ঠ চিত্রণ এবং সমকালীন সমাজবোধের নিখুঁত বিশ্লেষণ বাংলা কথাসাহিত্যে বিশেষ স্থান লাভ করেছে। আবু সাঈদ চৌধুরী (১৯৮৭) বাংলাদেশের ২য় রাষ্ট্রপতি। একাধারে কূটনীতিক, মানবাধিকারকর্মী এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী এক বরেণ্য ব্যক্তিত্ব। নীরদচন্দ্র চৌধুরী (১৯৯৯) অসাধারণ সাহিত্যিক এবং ইতিহাস বিশ্লেষক। ইংরেজিতে রচিত The Autobiography of an Unknown Indian তাঁকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। তিনি ছিলেন বিদ্রোহী বাঙালির প্রতিনিধি কণ্ঠ। আলী সরদার জাফরি (২০০০) উর্দু সাহিত্যের প্রথিতযশা কবি, প্রগতিশীল লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী। তাঁর কবিতায় সমাজতান্ত্রিক আদর্শ, প্রেম, প্রতিবাদ ও ঐতিহাসিক চেতনার প্রকাশ ঘটে। ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (২০০৫) সৌদি আরবের সাবেক বাদশাহ, যাঁর শাসনকালে দেশটি নানা সংস্কার ও উন্নয়নের পথে অগ্রসর হয়। ইসলামি বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন তিনি। কোরাজন অ্যাকুইনো (২০০৯) ফিলিপাইনের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী এবং ‘পিপল পাওয়ার রেভোলিউশন’-এর প্রতীক। তাঁর শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ বিশ্বে অনুপ্রেরণার উৎস। এল. কে. সিদ্দিকী (২০২৪) বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সপ্তম ডেপুটি স্পিকার। সংসদীয় রাজনীতিতে তাঁর অবদান বিশেষভাবে প্রশংসিত। উইলফোর্ড ব্রিমলি (২০২০) আমেরিকান অভিনেতা ও গায়ক, যিনি ‘Cocoon’, ‘The Natural’, ও ‘The Thing’-এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয় জয় করেন। আবদাল কাদির আস-সুফি (২০২১) স্কটিশ বংশোদ্ভূত ইসলামি চিন্তাবিদ ও সুফি লেখক। পশ্চিমা সমাজে ইসলাম প্রচার এবং সুফিবাদ বিস্তারে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। এই ব্যক্তিত্বেরা যাঁরা ১ আগস্টে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন, তাঁরা ইতিহাসের নানা বাঁকে রেখে গেছেন অবিস্মরণীয় চিহ্ন। তাঁদের কর্ম ও আদর্শ নতুন প্রজন্মের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে।

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ: