বিতর্কিত নির্বাচনের দিক যাচ্ছে ইসি: হাসনাত আবদুল্লাহ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:০৪, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০৪:১৪, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দুটি রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, বিতর্কিত নির্বাচনের দিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যাচ্ছে। এটি একটি স্বৈরতান্ত্রিক নির্বাচন কমিশনে রূপান্তরিত হয়েছে। এই মেরুদণ্ডহীন কমিশনকে গনিমতের মাল হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলো ভাগাভাগি করে নিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়ে বলে যে এ উপদেষ্টা থাকতে পারবেন না, ওই উপদেষ্টা থাকতে পারবে না। বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দুটি দল নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) এবং ঢাকা জেলার সমন্বয় সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন।
এনসিপির এই নেতা আরও অভিযোগ করেন, তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্য এনেছিলেন। কিন্তু এখন দেখছেন সরকার কতিপয় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নতজানু হয়ে তাদের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ভাগাভাগিতে সহায়তা করছে।
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের এই মুখ্য সংগঠক বলেন, আমরা ২০২৪, ২০১৮ ও ২০১৪ সালের সেই বিতর্কিত নির্বাচন চাই না। কিন্তু দেখতে পাচ্ছি, যেভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে তাতে আরেকটি ইঞ্জিনিয়ারিং করা নির্বাচন জাতি উপহার পাবে। আমরা দেখছি একটি রাজনৈতিক দল যে ব্যাংক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো দখল করেছে, সেই ব্যাংক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তার চালাচ্ছে।
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, একটি রাজনৈতিক দল স্কুল কমিটিগুলো দখল করেছে। কমিটির সভাপতি-সেক্রেটারি পদ দখল করেছে। শিক্ষকদের জিম্মি করেছে। আগামী নির্বাচনে কেন্দ্রগুলো দখল করার জন্য তাদের এখনই সশস্ত্র কায়দায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এনসিপিকে সংখ্যা দিয়ে মাপতে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর বড়াই আওয়ামী লীগকেও দিতে শুনতাম। ছাত্রলীগ নাকি এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন ছিল। এখন টর্চলাইট দিয়েও খুঁজে পাওয়া যায় না। নিজেরা দৌড়ের ওপর থাকে। এই লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী কাজে আসেনি। ন্যায্যতার কাছে যখন একজন ঘুরে দাঁড়ায়, তখন সারা বাংলাদেশ তাকে সমর্থন দেয়।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা বলতে চাই, আমাদের যে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী দেশের জন্য, জাতির জন্য রাস্তায় নেমে এসেছে, সেই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর কলঙ্কমুক্ত হওয়ার সুযোগ আসছে। আবার যদি ক্যান্টনমেটে বসে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়, আমাদের আপনারা দাবায় রাখতে পারবেন না। আমাদের ওপর ট্যাংক চালিয়ে দেবেন, গুলি করবেন? আমরা আলিফ, আমরা মুগ্ধ, আমরা আবু সাঈদের উত্তরসূরী। আমাদের ওপর দিয়ে ট্যাংক চালিয়ে দিলেও আমরা রাস্তা থেকে সরবো না।
এনসিপির এ নেতা জানান, তারা একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়ার জন্য সহায়তা করতে প্রস্তুত। কিন্তু সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্ষমতা ভাগাভাগি, প্রশাসন ভাগাভাগি বন্ধ করতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আপনাদের সংগঠিত হতে হবে। আপনাকে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। নিজের পকেটের টাকা খরচ করে আপনাকে রাজনীতি করতে হবে। আপনাদের অনেকেই মনে করেছেন বা ভাবছেন দল ক্ষমতায় যাবে এবং আমরা ক্ষমতার অংশ হিসেবে রাজনীতি করছি। তাহলে আপনারা ভুল পথে আছেন। যাদের এই চিন্তা রয়েছে তারা এখনই এনসিপি ত্যাগ করে নিজেদের মতো অন্য রাজনৈতিক দলে চলে যেতে পারেন।
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, তারা একটি উত্তম বাংলাদেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ উপহার দিতে চান। সেই পথে তাদের যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
