গবেষণা বলছে, কালো প্লাস্টিক পাত্র বাড়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি
জীবনযাপন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:৪৭, ২২ অক্টোবর ২০২৫

দৈনন্দিন কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহার ছাড়া চলা প্রায় অসম্ভব। শিশুদের খেলনা থেকে শুরু করে পানির বোতল, খাবারের পাত্রসহ সবখানেই প্লাস্টিক ব্যবহার হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের মধ্যে কালো প্লাস্টিক ব্যবহার খুবই বিপদজনক। তাই প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি। গবেষণা বলছে, কালো প্লাস্টিকে থাকে এমন সব রাসায়নিক, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
মার্কিন গবেষণা ও পরামর্শক সংস্থা "টক্সিক-ফ্রি ফিউচার"এর গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। কালো প্লাস্টিকের সঙ্গে আগুনের ঝুঁকি কমানোর জন্য মেশানো হয় একধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ।
ডেকা-বিডিই, টিবিবিপিএ এবং আরডিপির মতো বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির জন্য অনুমোদিত রাসায়নিক দ্রব্য থাকে কালো প্লাস্টিকে। ‘টক্সিক-ফ্রি ফিউচার’-এর গবেষক দলের প্রধান মেগান লিউ জানান, " আমরা গবেষণায় দেখেছি, রিসাইকেল প্রক্রিয়ায় এসব প্লাস্টিক খেলনা, খাবার প্যাকেজিং ও রান্নার সরঞ্জামের মতো পণ্য তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে বিষাক্ত রাসায়নিকগুলো এসব পণ্যে ছড়িয়ে পড়ছে, যা তৈরি করছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি।"
রাসায়নিক দ্রব্যগুলো আমাদের শরীর ও খাদ্যশৃঙ্খলে ঢুকে পড়ছে। স্বল্প মাত্রাও এসব রাসায়নিক দ্রব্য শরীরের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। গবেষণায় উঠে এসেছে, এসব রাসায়নিক পদার্থের ফলে ক্যানসার, হরমোনজনিত সমস্যা, স্নায়বিক ক্ষতি, প্রজনন ও বিকাশজনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডেকা-বিডিই একটি ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান হওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ‘টক্সিক-ফ্রি ফিউচার’র এই গবেষণায় গবেষকেরা কিছু নমুনায় অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ৫ থেকে ১ হাজার ২০০ গুণ ডেকা-বিডিই পেয়েছেন!
করনীয় উপায়:
* গবেষকেরা পরামর্শ দিয়েছেন ঘর থেকে কালো প্লাস্টিক সরিয়ে ফেলতে। তাঁরা এটির রিসাইকেলিংকে নিরুৎসাহিত করছেন। এর বদলে স্টেইনলেস স্টিল বা কাঠের তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
* শিশুদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় অভিভাবকদের প্লাস্টিক খেলনার পরিবর্তে অন্য কোনো উপাদানে তৈরি খেলনা খুঁজে নিতে বলেছেন গবেষকেরা।
* বিষাক্ত এসব রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শ কমানোর জন্য নিয়মিত ঘর পরিষ্কার করা এবং জানালা খুলে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। এতে ধুলা বা বাতাসে জমে থাকা রাসায়নিক পদার্থ দূর হয়।
* ঘন ঘন হাত ধোয়া ও ভেজা কাপড় দিয়ে মেঝে মোছা ধুলার সঙ্গে সঙ্গে এসব রাসায়নিক পদার্থের দূষণ থেকে বাঁচাবে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি কমবে বলে আশাকরা যায়।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট