নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকাই দাবি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে বিভাজন তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে সতর্ক অবস্থান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবি তোলেনি, বরং চায় অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো ভূমিকা পালন করুক।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইন উপদেষ্টা বলেন,“বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েই কাজ করছে। প্রশাসনের সব স্তরে আমরা ভারসাম্য ও আস্থার পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছি।”

তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী নির্বাচনের আগে জনপ্রশাসনের কার্যক্রম ব্যক্তিগতভাবে মনিটর করবেন, যেন কোনো পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত না আসে।

ড. আসিফ নজরুল বলেন,“রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনও অনৈক্য রয়ে গেছে। ফলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে কিছুটা সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগোলে এই সংশয় দূর হবে।”

আইন উপদেষ্টা জানান, বিএনপি তাদের সাম্প্রতিক বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা রেখেই কিছু নির্দিষ্ট দাবি তুলেছে।

তিনি বলেন, “তারা কোনোভাবেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা বলেনি। বরং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যেন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনকালীন ভূমিকা রাখে, সেটিই তাদের মূল দাবি।”

গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ড. আসিফ নজরুল বলেন,“এ ব্যাপারে সেনাপ্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রশংসনীয়। তাদের সাবজেলে রাখার সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত; আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।”

এর আগে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,“অন্তর্বর্তী সরকারকে এখনই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় যেতে হবে।”

তিনি আরও বলেন,“নির্বাচনের আগে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হলে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে না। সরকারের মধ্যে যারা দলীয় পরিচয়ে কাজ করছেন, তাদের অপসারণ জরুরি।”