জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্য সাক্ষাৎ
নির্বাচন প্রস্তুতি, সংস্কার ও তরুণদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:১৯, ২২ অক্টোবর ২০২৫

ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোট্জ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর ও ফলপ্রসূ হবে বলে তিনি আশা করেন।
রাষ্ট্রদূত ড. লোট্জ অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতি সমর্থন জানান এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আগ্রহ ও সম্পৃক্ততা বাড়ছে—এটি অত্যন্ত ইতিবাচক একটি পরিবর্তন।”
রাষ্ট্রদূত আরও প্রশংসা করেন সরকারের সাম্প্রতিক সংস্কার উদ্যোগের, বিশেষত ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ । তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে বসে আলোচনায় অংশ নিতে দেখা উৎসাহজনক। নির্বাচন পরবর্তী সময়েও এসব সংস্কার অব্যাহত রাখা জরুরি।”
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস বলেন, “জাতীয় ঐক্য কমিশন অসাধারণ কাজ করেছে—বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে একই প্ল্যাটফর্মে এনে জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করিয়েছে। এটি ছিল ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা ঐক্য ও পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেছে। নির্বাচনের আগে জনগণের আস্থা বৃদ্ধিতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
তিনি আরও বলেন, “আসন্ন ফেব্রুয়ারি নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর করার জন্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।”
আলোচনায় উঠে আসে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহও—বিশেষ করে জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে। উভয়পক্ষই দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এ বিষয়ে জার্মান সরকারের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, “ইউরোপে জার্মানি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। আমি আশা করি নতুন রাষ্ট্রদূত এ সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত করবেন—বিশেষ করে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি খাতে।”
তরুণ সমাজের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আজকের তরুণরা প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে নিজেদের মত প্রকাশ করতে পারে, অন্যদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে।”
তবে তিনি সতর্ক করেন মিথ্যা তথ্যের অপব্যবহার নিয়ে—“ভুল তথ্য বা বিভ্রান্তি আজ আমাদের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে,” বলেন প্রফেসর ইউনূস।