বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

| ৭ কার্তিক ১৪৩২

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রিজন ভ্যানে

মানবতাবিরোধী মামলায় ট্রাইবুনালে সেনা কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:৩৮, ২২ অক্টোবর ২০২৫

মানবতাবিরোধী মামলায় ট্রাইবুনালে সেনা কর্মকর্তারা

মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি আলোচিত মামলার শুনানিতে অংশ নিতে বুধবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের। রাজধানীর পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে অবস্থিত ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সকাল ৭টার কিছু পর সবুজ রঙের একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রিজন ভ্যানে করে ৩২ জন আসামিকে সেখানে আনা হয়।

হাজিরদের মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা। কেউ বর্তমান, কেউ অবসরপ্রাপ্ত। তাদের মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে সেনা হেফাজতে রয়েছেন। সবাই সাধারণ পোশাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হন।

তিনটি মামলার মধ্যে দুটি গুম ও নির্যাতনের ঘটনার অভিযোগে দায়ের করা, যা আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তৃতীয় মামলাটি ২০২৫ সালের জুলাই মাসে রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত সহিংসতা ও নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত।

প্রথম মামলার আসামি ১৭ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন এবং কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, যিনি বর্তমানে অবসরকালীন ছুটিতে আছেন। তারা সবাই সেনা হেফাজতে রয়েছেন।

এছাড়া র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেমও সেনা হেফাজতে থাকা আসামিদের মধ্যে আছেন।

এই মামলার এজাহারে আরও পলাতক আসামি হিসেবে নাম রয়েছে র‌্যাবের সাবেক তিন মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, এম খুরশিদ হোসেন ও মো. হারুন-অর-রশিদের। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং র‌্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ খায়রুল ইসলামের নামও এতে আসামি হিসেবে রয়েছে। তারা সবাই বর্তমানে পলাতক।

দ্বিতীয় মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনকে। তাদের মধ্যে ডিজিএফআইয়ের (সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা) সাবেক তিন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী বর্তমানে সেনা হেফাজতে রয়েছেন।

এই মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী এবং মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক।

এছাড়া ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ তৌহিদুল উল ইসলাম, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মখছুরুল হকের নামও এজাহারে রয়েছে। তাদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য মেলেনি, তবে কিছু সূত্রের দাবি, তারা দেশত্যাগ করেছেন।

তৃতীয় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে গত জুলাইয়ে রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত সহিংসতা ও নির্যাতনের অভিযোগে। এই মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রাশেদুল ইসলাম এবং সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান। এর মধ্যে রেদোয়ানুল ইসলাম ও রাফাত-বিন-আলম বর্তমানে সেনা হেফাজতে আছেন, বাকি দুজন পলাতক।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

শেখ হাসিনার আইনজীবী চৌধুরী মামুন অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বাঁচার চেষ্টা করছেন
তত্ত্বাবধায়কের মুডে যেতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে: আমীর খসরু
দূর্ঘটনার কবলে ভারতের প্রেসিডেন্ট মুর্মুর হেলিকপ্টার
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রিজন ভ্যানে মানবতাবিরোধী মামলায় ট্রাইবুনালে সেনা কর্মকর্তারা
বিবিসি ও ইবিইউর নতুন গবেষণা প্রকাশ সংবাদভিত্তিক প্রশ্নে অর্ধেক সময় ভুল তথ্য দেয় এআই মডেল
গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ পলাতকদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়নি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকাই দাবি