গ্রেপ্তার নয়, স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন সেনা কর্মকর্তারা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:১৩, ২২ অক্টোবর ২০২৫

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়া সেনা কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার নন, বরং স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন— এমন দাবি করেছেন তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন,“আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই এসব সিনিয়র ও অভিজ্ঞ সামরিক কর্মকর্তা আদালতে হাজির হয়েছেন। তারা বিশ্বাস করেন, আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।”
ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন জানান, প্রক্রিয়াগত কারণে হয়তো কিছু নথিতে ‘গ্রেপ্তার’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তারা কখনোই গ্রেপ্তার ছিলেন না।
তিনি বলেন, এর আগে সেনা সদর দপ্তর জানিয়েছিল, তারা সেনা আইনের আওতায় ‘আর্মি এটাচমেন্টে’ ছিলেন— অর্থাৎ সেনা হেফাজতে, কোনো অপরাধমূলক আটক অবস্থায় নয়।
আইনজীবী আরও জানান, ট্রাইব্যুনালে তিনটি পৃথক আবেদন দাখিল করা হয়েছে—জামিন আবেদন, যোগাযোগের বিশেষ সুবিধা (Communication Privilege) আবেদন ও সাব-জেলে রাখার আবেদন।
তবে জেল কর্তৃপক্ষ সাব-জেল বিষয়টি দেখবে বলে শেষ আবেদনটি আর উপস্থাপন করা হয়নি।
ব্যারিস্টার সারোয়ার বলেন, “ট্রাইব্যুনাল আবেদনগুলো শুনেছেন, এবং পরবর্তী তারিখে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেনের দাবি, প্রকৃত অপরাধীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, যারা প্রকৃত অপরাধী— যেমন জেনারেল কবির, জেনারেল আকবর, তারেক সিদ্দিকী— তারা এখন পলাতক। কিন্তু আমার মক্কেলরা দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এক রাজসাক্ষী (সাবেক আইজিপি) জানিয়েছেন যে, এসব ঘটনা ঘটেছিল তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শেখ হাসিনার নির্দেশে, এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তাতে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।
ব্যারিস্টার সারোয়ার বলেন, যারা স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে, তা প্রমাণ করে তারা নির্ভীক এবং আইনের প্রতি আস্থাশীল। আমার মক্কেলরা আদালতের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করবেন।
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন পৃথক মামলায় মোট ১৫ জন সেনা কর্মকর্তা বুধবার সকাল ৭টার পর ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।