থাইরয়েডে বেশি আক্রান্ত হন নারীরা : জানুন কারণ ও প্রতিরোধের উপায়
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:৪০, ২০ অক্টোবর ২০২৫

পুরুষের তুলনায় নারীরাই বেশি ভোগেন থাইরয়েডের সমস্যায়— এমনটাই বলছে আমেরিকান থাইরয়েড অ্যাসোসিয়েশন । সংস্থার তথ্যমতে, যদি প্রতি ১০০ জনের মধ্যে এক জন পুরুষ থাইরয়েডে আক্রান্ত হন, তবে নারীদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা পাঁচ থেকে আট গুণ বেশি। কেন এমন হয়, তার উত্তর খুঁজছেন চিকিৎসকেরা।
হরমোনের ভারসাম্যই মূল কারণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পার্থক্যের মূলে রয়েছে হরমোনের ওঠানামা। নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের ক্ষরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা ব্যাহত হয়। ইস্ট্রোজেন হরমোন অতিরিক্ত নিঃসৃত হলে থাইরয়েড হরমোনের কর্মক্ষমতা কমে যায়— তখনই শুরু হয় বিপত্তি।
থাইরয়েডের কাজ কী?
গলার শ্বাসনালির সামনের দিকে থাকা ছোট্ট থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় দুটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন— টি-থ্রি (T3) ও টি-ফোর (T4)। এই হরমোন শরীরের বিপাকক্রিয়া, বুদ্ধির বিকাশ, বৃদ্ধি, ঋতুচক্র, এমনকি গর্ভধারণ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে।
হরমোনের ক্ষরণ যদি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় বা কমে যায়, তখন দেখা দেয় দুটি প্রধান সমস্যা—
- হাইপোথাইরয়েডিজম: হরমোনের মাত্রা কমে গেলে ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, চুল পড়া, ঘুমঘুম ভাব ইত্যাদি হয়।
- হাইপারথাইরয়েডিজম: হরমোন বেশি হলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, ওজন কমে, ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়।
চিকিৎসা দেরি করলে কী হতে পারে?
চিকিৎসা না হলে হরমোনের ভারসাম্য আরও বিগড়ে যায়। রক্তে টি-থ্রি ও টি-ফোর-এর সঙ্গে অন্য হরমোনের মাত্রাও অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। ফলস্বরূপ হৃদরোগ, হরমোনজনিত বন্ধ্যত্ব, মানসিক অবসাদ— এমন নানা জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিরোধ ও সচেতনতা
থাইরয়েডের চিকিৎসা সম্পূর্ণ সম্ভব। তবে তার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত রক্তপরীক্ষা, সুষম খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম ও ব্যায়াম।
বিশেষজ্ঞদের মতে—
- আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করুন।
- চর্বি ও চিনিযুক্ত খাবার কম খান।
- স্ট্রেস কমানো ও নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করুন।
- গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড টেস্ট করানো অত্যন্ত জরুরি।
থাইরয়েড হরমোন এমন এক উপাদান যা একবার ভারসাম্য হারালে গোটা শরীরের ছন্দ নষ্ট করতে পারে। তাই আগে থেকেই সচেতন থাকাই শ্রেয়।