রাজনীতিবিদরা ঐক্য হারাচ্ছেন, উদ্বেগ মির্জা ফখরুলের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬:১৭, ২০ অক্টোবর ২০২৫

ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে যে নতুন সংহতির প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, তা ভেঙে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এত বড় একটি অভ্যুত্থানের পর দেশটাকে নতুন করে গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু চারদিকে দেখি রাজনীতিবিদরা ঐক্য হারিয়ে ফেলছেন। অনৈক্যের সুর ছড়িয়ে পড়ছে—এটা হতাশার বিষয়।’
‘ম্যাগাজিন বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা’ আয়োজিত এসএসসি জিপিএ–৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা উদ্ধৃত করে বলেন, ‘ভবিষ্যৎ তোমাদের ডাকছে। এই প্রতিযোগিতার পৃথিবীতে টিকে থাকতে হলে নিজেদের তৈরি করতে হবে। না পারলে ছিটকে যেতে হবে।’
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ড. সবুর খানের মতো মানুষ যেভাবে বলেছেন, নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে পৃথিবীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার মতোভাবে।’
দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ‘অত্যন্ত নিম্নমানের’ আখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, শিক্ষার ওপর যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বিএ–এমএ পাস করার পরও অনেক তরুণ বেকার। অথচ যদি তারা কারিগরি বা ডিপ্লোমা শিক্ষায় দক্ষ হতো, তাহলে কর্মসংস্থানের অভাব হতো না।’
তিনি মনে করেন, এই ব্যর্থতার মূল দায় রাজনীতিক ও আমলাতন্ত্রের। ‘আমরা নীতিনির্ধারণে ভুল করেছি, যেখানে ভোকেশনাল ও টেকনিক্যাল ট্রেনিংয়ের সুযোগ থাকা উচিত ছিল, তা গড়ে তোলা হয়নি,’ বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে শিক্ষকরা রাস্তায় আন্দোলন করছেন বেতনের দাবিতে। অথচ আমরা যদি এমন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতাম যেখানে অতি মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা পেত আর বাকিরা কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হতো, তাহলে সমাজ অনেক বেশি লাভবান হতো।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আজ দেশে পর্যাপ্ত ভোকেশনাল সেন্টার নেই, কারিগরি প্রশিক্ষণ নেই। বিএ, এমএ ডিগ্রি দিয়ে কেবল বেকার তরুণ তৈরি হচ্ছে। কর্মসংস্থানের জন্য টেকনিক্যাল শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ড. সবুর খান, বিএনপির সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা’ সম্পাদক হারুন অর রশিদসহ শিক্ষাবিদ এম এ সাজ্জাদ, কবীর হোসেন, কাজী শওকত হোসেন প্রমুখ বক্তৃতা দেন। শেষে বিএনপি মহাসচিব কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন।