মিয়ানমারে সেনা অভিযান: স্টারলিংকের ৩০ রিসিভার জব্দ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:০৩, ২০ অক্টোবর ২০২৫

মিয়ানমারে ইন্টারনেট প্রতারণা রোধে সেনা অভিযান চালিয়ে স্টারলিংকের ৩০টি স্যাটেলাইট রিসিভার ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম জব্দ করেছে জান্তা সরকার। সোমবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী কেকে পার্কে এই অভিযান পরিচালিত হয়। সেনাবাহিনী প্রায় ২০০টি ভবনে তল্লাশি চালিয়ে ২ হাজার ২০০ কর্মীকে শনাক্ত করেছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। এসব কর্মীদের অনেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে পাচার হয়ে আসা শ্রমিক, যাদেরকে জোরপূর্বক প্রতারণা চক্রে কাজে লাগানো হয়।
জান্তা সরকারের দাবি, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিলিয়ন-ডলারের কালোবাজারে স্টারলিংক ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে গেছে, যার জেরেই অভিযানটি পরিচালিত হয়।
২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমার এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনলাইন স্ক্যাম চক্রের প্রধান কেন্দ্রস্থল। করোনা মহামারির পর সীমান্ত অঞ্চলে ‘ইন্টারনেট প্রতারণা কেন্দ্র’ বা স্ক্যাম সেন্টার গড়ে উঠেছে শতাধিক।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চীন, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের যৌথ অভিযানে প্রায় ৭ হাজার কর্মীকে মুক্ত করা হয়। তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, মানবপাচারের মাধ্যমে প্রতারণা কেন্দ্রগুলোতে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
তবে এএফপি’র সাম্প্রতিক অনুসন্ধান বলছে, পুরনো কেন্দ্রগুলোর স্থানে নতুন ভবন ও ছাদে স্টারলিংক অ্যান্টেনা স্থাপন চলছে, যা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
মিয়ানমারে এখনো স্টারলিংকের কোনো সরকারি লাইসেন্স নেই। ফেব্রুয়ারির অভিযানের আগেও স্থানীয় ইন্টারনেট সরবরাহকারীদের তালিকায় এর নাম ছিল না। কিন্তু এশিয়ান ইন্টারনেট রেজিস্ট্রি এপনিক (APNIC) জানিয়েছে, জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে প্রতিদিনই মিয়ানমার স্টারলিংক ব্যবহারে শীর্ষে ছিল।
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্ক্যাম চক্রগুলো প্রায় ৩৭ বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেয়। থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তের মোই নদীর ধারে এখন অন্তত ২৭টি নতুন প্রতারণা কেন্দ্রের নির্মাণ চলছে, যেখানে কর্মীদের আবাসিক ভবন ও কার্যালয় একসঙ্গে তৈরি হচ্ছে।