ইসিকে চিঠি
‘শাপলা’য় অনড় এনসিপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২:২০, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২২:৩৪, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

দলীয় প্রতীকের ক্ষেত্রে ‘শাপলা’য় অনড় অবস্থানে রয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ জন্য প্রতীক অন্তর্ভুক্তি বা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিদ্যমান নীতিমালা ও মানদণ্ড কী—তা লিখিতভাবে জানাতে কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে দলটি।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের কাছে লিখিতভাবে এই দাবি জানিয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
ইসির পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকা থেকে এনসিপিকে একটি প্রতীক বেছে নিতে হবে। কারণ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯(১) অনুসারে ‘শাপলা’ প্রতীকটি অন্তর্ভুক্ত নয়।
তবে এনসিপির দাবি, তারা ২২ জুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন দেয় এবং সেই সময়েই দলের অনুকূলে ‘শাপলা’ প্রতীক সংরক্ষণের আবেদন করে। এর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে কমিশনের সঙ্গে একাধিক বৈঠকেও দলটি শাপলা প্রতীকের পক্ষে তাদের অবস্থান জানিয়ে আসছে।
দলটি আরও জানায়, গত ৩ ও ২৪ সেপ্টেম্বর এবং ৭ অক্টোবর এনসিপি কমিশনের কাছে আলাদা তিনটি আবেদন দেয়, যাতে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ ও ‘লাল শাপলার’ মধ্যে যেকোনও একটি প্রতীক বরাদ্দের অনুরোধ জানানো হয়। এমনকি বিভিন্ন ভার্সনে আঁকা শাপলার নমুনা চিত্রও কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
এনসিপির চিঠিতে ইসির কাছে চারটি দাবি
১. কমিশন লিখিতভাবে জানাবে, প্রতীক অন্তর্ভুক্তি বা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান নীতিমালা ও মানদণ্ড কী এবং কোন আইনি ভিত্তিতে শাপলা, সাদা শাপলা বা লাল শাপলাকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
২. যদি মানদণ্ড না থাকে, তা অবিলম্বে প্রণয়ন ও প্রকাশ করতে হবে এবং সব দলের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
৩. নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর ফরম–২ অনুযায়ী এনসিপির প্রার্থিত প্রতীক উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
৪. প্রতীক বরাদ্দে যুক্তিসঙ্গত, স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা প্রদর্শন করতে হবে।
চিঠিতে এনসিপি অভিযোগ করেছে, প্রতীক ইস্যুতে কমিশন দলটির সঙ্গে অন্যায্য ও বৈরী আচরণ করছে। এতে জনগণের সঙ্গে কমিশনের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে দাবি দলটির।
নাহিদ ইসলাম চিঠিতে বলেন, “ইসি কেন নিজের ইচ্ছেমতো প্রতীক বরাদ্দ দিতে চায়; এটি অনাকাঙ্ক্ষিত, স্বেচ্ছাচারী ও বেআইনি।”
দলটির মতে, বর্তমান নির্বাচন কমিশন এখনও নিজেদের কার্যক্রমকে আগের “ফ্যাসিবাদী আমলের পাতানো নির্বাচন আয়োজনকারী কমিশনের” থেকে আলাদা করতে পারেনি, যা দেশকে আবারও নির্বাচনী সংকটে ঠেলে দিতে পারে।
এর আগে ইসির পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছিল, “এনসিপি নামীয় দলটি নিবন্ধনের আবেদন করেছে এবং আবেদনপত্রে প্রতীক হিসেবে প্রথমে ‘শাপলা’, ‘কলম’ ও ‘মোবাইল’ উল্লেখ করা হয়। পরে সেটি পরিবর্তন করে ‘শাপলা’, ‘লাল শাপলা’ ও ‘সাদা শাপলা’ প্রস্তাব করা হয়। তবে ২০০৮ সালের বিধি ৯(১) অনুসারে ‘শাপলা’ প্রতীকটি বিদ্যমান তালিকায় নেই, তাই সেটি বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব নয়।”