এই কমিশনের অধীনে ভোট অসম্ভব: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:০১, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কার্যক্রম নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘এই কমিশনের অধীনে আমরা কীভাবে ভোটে যাব?’— জনগণের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলে কমিশনের আর দায়িত্বে থাকার অধিকার নেই।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন ‘জংলি কায়দায়’ চলছে। আইন ও সংবিধানের ধারা উপেক্ষা করে ইসি বর্তমানে একদলীয় স্বার্থে কাজ করছে। এনসিপি কমিশনের কাছে অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
পাটওয়ারী অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচন কমিশন গনিমতের মাল হিসেবে বিভিন্ন পক্ষ ভাগাভাগি করে নিয়েছে। এটি জনগণের প্রতিষ্ঠান, কোনো পরিবারের বা গোষ্ঠীর নয়। জিয়া বা মুজিব পরিবার কিংবা নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর কাছে নির্বাচন কমিশনকে বর্গা দিতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ইসির কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন না করে প্রবাসী ভোটারের নামে ‘আমোদ-ফুর্তি’করছেন। এতে নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি ইচ্ছে মতো নির্বাচন কমিশন চালাবে, এটা বাংলাদেশে আর চলবে না। আমরা সতর্ক করেছি— তারা যদি সমস্যাগুলোর সুরাহা না করেন, তাহলে তাদের পদত্যাগ করাতে বাধ্য হবো।’
পাটওয়ারী জুলাই সনদ নিয়েও কড়া সমালোচনা করেন। তার ভাষায়, ‘জুলাই সনদ নামে এক নাটক সংসদে পাস হয়েছে, অথচ গণভোটের কোনো নির্দেশনাই নির্বাচন কমিশনে আসেনি। চুপিসারে আনা এই সনদ এনসিপি মানবে না।’ তিনি মনে করেন, অদৃশ্য শক্তি থেকে ইসিকে মুক্ত না করলে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, যদি রাষ্ট্র ব্যবসায়ী বা নাগরিকের নিরাপত্তা দিতে না পারে— যেমন গুদামঘরে আগুনের ঘটনায় দেখা গেছে— তবে কীভাবে দেশ নির্বাচনমুখী হবে? ভোটার তালিকা হালনাগাদে অনিয়ম চললে নির্বাচন আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী শেষ পর্যন্ত বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আন্তরিক হলে এক মাসের মধ্যেই ভালো নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। কিন্তু মনমর্জি চললে জনগণই তাদের পদত্যাগে বাধ্য করবে।’