অনলাইন গোপনীয়তায় কড়া অবস্থান ইউএই আদালতের
অনুমতি ছাড়া নারীর ছবি পোস্টে জরিমানা ২০ হাজার দিরহাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২০:৪৩, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২২:২১, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

প্রতীকী ছবি
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনলাইন গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে ২০ হাজার দিরহাম জরিমানা করেছে আদালত। আবুধাবি ফ্যামিলি, সিভিল অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ক্লেইমস কোর্টের এ রায় প্রকাশ পায় গত ১৬ অক্টোবর।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি এক নারীর অনুমতি ছাড়া তার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন। এতে নারীটি মারাত্মক মানসিক চাপ ও সামাজিক ক্ষতির শিকার হন। ঘটনার পর তিনি মামলা করেন এবং আদালতের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
এর আগে একই ঘটনায় আবুধাবি ক্রিমিনাল কোর্ট তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। পরে আপিল আদালতও সেই রায় বহাল রাখে এবং চূড়ান্তভাবে কোনো আপিল না করায় রায়টি কার্যকর হয়।
ক্ষতির মাত্রা ও রায়
মামলার বাদী নারী ৫০ হাজার দিরহাম ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিলেন। কিন্তু আদালত তদন্তের পর দেখে যে, ঘটনার কারণে তার সরাসরি আর্থিক ক্ষতি হয়নি, বরং প্রধানত মানসিক ও নৈতিক ক্ষতি হয়েছে। তাই ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনা করে আদালত ২০ হাজার দিরহাম ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে।
আদালত ফেডারেল সিভিল ট্রানজাকশন আইন ২৮২ নম্বর অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দেয়, যেখানে বলা হয়েছে— “যে কোনো ব্যক্তি যদি অন্যের ক্ষতির কারণ হয়, তা সে ইচ্ছাকৃত হোক বা অনিচ্ছাকৃত, তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকতে হবে।”
ইউএইর কঠোর গোপনীয়তা আইন
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অন্যের ছবি, ব্যক্তিগত তথ্য, ভয়েস নোট বা মেসেজ অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করাকে গুরুতর সাইবার অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এ ধরনের অপরাধের শাস্তি হতে পারে সর্বোচ্চ ৫ লাখ দিরহাম জরিমানা, কারাদণ্ড, এমনকি বিদেশিদের ক্ষেত্রে দেশ থেকে বহিষ্কারও।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল বা ব্লগ— সবকিছুই ইলেকট্রনিক মাধ্যমের অন্তর্ভুক্ত। এর যেকোনো একটি মাধ্যমে অন্যের ব্যক্তিগত বিষয় প্রকাশ করলে তা সাইবার অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।”
এ ছাড়া ইউএইর মানহানি আইন অনুসারে, কোনো ব্যক্তির মর্যাদা, সম্মান বা সামাজিক অবস্থান ক্ষুণ্ণ করতে পারে এমন বক্তব্য, ছবি বা ভিডিও প্রচার করলেই তা মানহানিকর বলে বিবেচিত হবে— এমনকি সেটি সত্য হলেও।
সূত্র: খারিজ টাইমস