শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

| ৩ কার্তিক ১৪৩২

এআই ধ্বংস করে দেবে, পথে বসবেন হাজার মানুষ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬:১৩, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

এআই ধ্বংস করে দেবে, পথে বসবেন হাজার মানুষ!

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই—মানবসভ্যতার অন্যতম বিস্ময়কর উদ্ভাবন। প্রযুক্তি, চিকিৎসা, অর্থনীতি থেকে শুরু করে শিক্ষা ও গণমাধ্যম—সব ক্ষেত্রেই এআই এখন বিপ্লব ঘটাচ্ছে। তবে এই বিপ্লবের পেছনে আছে এক ভয়াবহ আশঙ্কাও। সেই আশঙ্কার কথাই উচ্চারণ করলেন সদ্য অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পিটার হাউইট। তিনি বলেন, “এআই যেমন আশ্চর্যজনক সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে, তেমনি এটি লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ধ্বংস করারও ক্ষমতা রাখে।”

ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাউইট সতর্ক করেছেন—কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানব সমাজে ‘ক্রিয়েটিভ ডেসট্রাকশন’-এর নতুন ঢেউ আনতে পারে। এটি একদিকে যেমন উন্নয়ন ঘটাবে, অন্যদিকে প্রচলিত শিল্প ও পেশার ভিত্তি ভেঙে দিতে পারে।

তিনি বলেন, “এআই এমন একটি অসাধারণ প্রযুক্তি যা মানুষের দক্ষ শ্রম প্রতিস্থাপন করতে পারে। এটি যেমন কর্মক্ষমতা বাড়াবে, তেমনই বহু চাকরি বিলুপ্ত করে দিতে পারে।”

এই ‘সৃজনশীল ধ্বংস’-এর ধারণাই হাউইট, ফিলিপ অ্যাঘিয়ন এবং জোয়েল মোকিরের যৌথ গবেষণার মূল বিষয়, যার জন্য তারা ২০২৫ সালের অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

হাউইটের মতে, এখনই সঠিকভাবে প্রস্তুতি না নিলে এআই ভবিষ্যতের শ্রমবাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলবে। বিশেষ করে মধ্যম দক্ষতার কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

তিনি বলেন, “এটি এমন এক প্রযুক্তি যা শ্রম প্রতিস্থাপন করে, এবং সেটাই উদ্বেগের কারণ। একে নিয়ন্ত্রণ না করলে সমাজে ব্যাপক বেকারত্বের ঝুঁকি তৈরি হবে।”
এই সতর্কবার্তাকে সমর্থন করে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম সম্প্রতি এক আইন স্বাক্ষর করেছেন যা এআই চ্যাটবট ব্যবহারে কিছু সীমা আরোপ করেছে।

নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদের পরামর্শ, “এআই-কে সম্পূর্ণভাবে রুখে দেওয়া সম্ভব নয়, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এটি একটি দ্বন্দ্বময় প্রযুক্তি—যা যেমন নতুন সুযোগ তৈরি করে, তেমনই পুরনো কর্মসংস্থানকে ধ্বংস করে।”

তার মতে, সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উচিত দ্রুত ‘নিয়ন্ত্রণ কাঠামো’ তৈরি করা, যাতে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার বজায় থাকে।

তবে সহ-নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জোয়েল মোকির কিছুটা আশাবাদী। তার মতে, “যন্ত্র আমাদের প্রতিস্থাপন করে না, বরং আমাদের আরও সৃজনশীল, চ্যালেঞ্জিং কাজে নিযুক্ত হতে সাহায্য করে।”

তার বিশ্বাস, এআই মানুষের কর্মসংস্থান শেষ করবে না, বরং কাজের ধরন বদলে দেবে—যেখানে সৃজনশীলতা ও অভিযোজন ক্ষমতাই হবে ভবিষ্যতের মূল সম্পদ।

আরও পড়ুন