৫ ব্যাংক একীভূতকরণ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬:৪৩, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: ফাইলফটো
সংকটে পড়া পাঁচ বেসরকারি ব্যাংককে একীভূত করে একটি নতুন শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ, সেই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সাধারণ বিনিয়োগকারী শহিদুল ইসলামের পক্ষে ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন এই রিট আবেদন দাখিল করেন। রিটে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থসচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিবাদী করা হয়েছে।
গত ৯ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদ ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক—এই পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার প্রস্তাবে সায় দেয়। সরকার জানিয়েছে, এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ও দায় একত্রিত করে নতুন একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠন করা হবে, যার সম্ভাব্য নাম ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’ বা ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’।
নতুন ব্যাংককে একটি বাণিজ্যিক, সুশাসননির্ভর ও পেশাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানোর পরিকল্পনা করেছে সরকার। এ প্রক্রিয়ায় কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি হারাবেন না এবং কোনো আমানতকারী তার আমানত হারাবেন না—এ নিশ্চয়তাও দেওয়া হয়েছে।
নতুন ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন প্রাথমিকভাবে ধরা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা দেবে সরকার—১০ হাজার নগদ এবং বাকি ১০ হাজার সুকুক বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে। সুকুক হলো শরিয়াহসম্মত বন্ড, যা সুদনির্ভর বন্ডের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় এবং একটি বৈধ আর্থিক চুক্তির দলিল হিসেবে বিবেচিত।
বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা আসবে প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের আমানতকে শেয়ারে রূপান্তরের মাধ্যমে, যা বেইল-ইন প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত। এই প্রক্রিয়ায় আমানত কিংবা পাওনার একাংশ শেয়ারে রূপান্তরিত হয়ে ব্যাংকটি পুনর্গঠনের সুযোগ তৈরি হয়। পরে রেজল্যুশন পরিকল্পনা অনুযায়ী তা ধীরে ধীরে পরিশোধ করা হবে।
নতুন ব্যাংকটি শুরুতে পুরোপুরি রাষ্ট্রমালিকানাধীন থাকবে, তবে পাঁচ বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে মালিকানা বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশাবাদী, রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে ব্যাংকটি গেলে বাজারে আতঙ্ক কমবে এবং ক্ষুদ্র আমানতকারীদের আস্থা ফিরবে। একই সঙ্গে যারা আতঙ্কে টাকা তুলতে চান, তাদের অর্থ দ্রুত ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
রিট আবেদনটি এখন হাইকোর্টের শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
