দিলীপ আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪৬, ১৮ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৩:৪৫, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে স্বর্ণ–হীরার ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে বিপুল চোরাচালান ও অবৈধ অর্থপাচারের অভিযোগে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মালিক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে ৬৭৮ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
সিআইডির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের নভেম্বর—দীর্ঘ তদন্তে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের আর্থিক লেনদেন, এলসি, ব্যাংক হিসাব, আমদানি নথি ও স্থানীয় বাজার থেকে স্বর্ণ–হীরা সংগ্রহের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাজার থেকে ৬৭৮ কোটি ১৯ লাখ টাকার স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করেছে, যার কোনও বৈধ উৎস দেখাতে পারেনি মালিক পক্ষ।
সিআইডির তথ্য অনুযায়ী—২০০৬ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এলসির মাধ্যমে বৈধভাবে আমদানি করা হয় মোট ৩৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার স্বর্ণ, অলংকার, লুজ ডায়মন্ড ও উপকরণ।
কিন্তু একই সময়ে স্থানীয় বাজার থেকে ‘ক্রয়/বিনিময়/পরিবর্তন’ পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হয় ৬৭৮ কোটিরও বেশি স্বর্ণ ও হীরা।
সিআইডিতে জমা দেওয়া নথিতে এসব স্বর্ণ–হীরার বৈধ উৎস, সরবরাহকারী বা ইনভয়েস পাওয়া যায়নি।ফলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়, এগুলো চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আনা হয়েছে।
সিআইডির অনুসন্ধানে উঠে আসে—ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের মালিক দিলীপ আগরওয়ালা দীর্ঘদিন ধরে দেশে-বিদেশে স্বর্ণ–হীরার ব্যবসার আড়ালে অবৈধ সম্পদ সঞ্চয় ও মানিলন্ডারিং কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিলেন। চোরাচালানের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিভিন্নভাবে রূপান্তর, হস্তান্তর ও ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট তথ্যও তদন্তে পাওয়া গেছে।
গত ১৬ নভেম্বর সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট মামলার অনুমোদন পায় এবং পরদিন (১৭ নভেম্বর) গুলশান থানায় মামলা নং–৩০ (তারিখ: ১৭/১১/২০২৫) রুজু হয়। মামলা করা হয়েছে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায়।
মামলা তফসিলভুক্ত হওয়ায় পুরোটাই তদন্ত করবে সিআইডি।
তদন্ত দল জানায়, তারা—প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব,এলসি নথি,আমদানি–রপ্তানি তথ্য,মালিক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আর্থিক লেনদেন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে আইনি ব্যবস্থা নেবে।
সিআইডি বলেছে, রাষ্ট্রের অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তি বা বাণিজ্যগোষ্ঠী যেই হোক, তাদের আইনের আওতায় আনতে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
